ঘেটে দেখতে লাগলো। এসব গাঁয়ের সকলেই দেখে ঝিনুক পেলে। কুলের বীচির মত জিনস হাতে ঠেকলো ওর।
—কি রে ঠাকুরবঝি, এটা দ্ব্যাখ তো?
—ওরে, এ ঠিক মুক্তো।
—দূর-
—ঠিক বলচি বৌদিদি। - মাইরি মুক্তো।
—তুই কি ক’রে জানালি মুক্তো?
—চ দেখাবি মাকে।
—না ভাই ঠাকুরঝি এসব কাউকে দেখাসা নে।
—চল না, তোর লজ্জা কিসের?
পাড়ায় জানাজানি হয়ে গেল এ বাড়ির বৌ ইছামতীতে দামী মুক্তো পেয়েচে ইছামতীর জলে। চণ্ডীমণ্ডপে বৃদ্ধদের মজলিসে দিনকতক এ কথা ছাড়া আর অন্য কথা রইল না। একদিন বিধু স্যাকরা এসে মুক্তোটা দেখেশুনে দর দিলে যাট টাকা। নিস্তারিণীর স্বামী কখনো এত টাকা একসঙ্গে দেখে নি। বিধু স্যাকরা মুক্তোটা নিয়ে চলে যাবার কিছু আগে নিস্তারিণীর কি মনে হোলো, সে বললে-ও মুক্তো আমি বেচবো না-
সেইদিনই একজন মুসলমান ওদের বাড়ি এসে মুক্তোটা দেখতে চাইলে। দেখেশুনে দাম দিলে একশো টাকা। নিস্তারিণী তবুও মুক্তো বিক্রি করতে চাইলে না।
এদিকে গাঁয়ের মধ্যে হুলুস্থুল। অমুকের বৌ একশো টাকা দামের মুক্তো পেয়েচে ইছামতীর জলে। একশো টাকা একসঙ্গে কে দেখেচে এই পাঁচপোতা গ্রামের মধ্যে? ভাগ্যিটা বড় ভালো ওদের। বৌয়ের দল ভিড় ক’রে ওর কপালে সিঁদুর দিতে এল, ওর শাশুড়ী নরহরিপুরের শ্যামরায়ের মন্দিরে মানতের পুজো দিয়ে এল। এ পাকা কলা পাঠিয়ে দেয়, ও পেঁপে পাঠিয়ে দেয়।
তিলুর সঙ্গে একদিন নিস্তারিণী দেখা করতে এলো। মুক্তোটা সে নিয়েই এসেচে। খোকা সেটা হাতে নিয়ে জিজ্ঞাসু চোখে মায়ের মুখের দিকে চেয়ে
২৫১