খোকা বাবার বেজায় ন্যাওটো। বাবাকে পেলে আর কাউকে চায় না। সে এসে বাবার হাত থেকে নারকেল নিয়ে বাবার কোলে মাথা রেখে বলতে লাগলো বাবার মুখের দিকে চেয়ে-ও বাবা, বাবা!
—কি রে খোকা?
খোকা বাবার গায়ে হাত বুলিয়ে বলে-ও বাবা, বাবা!
—এই তো বাবা।
এমন সময়ে প্রবীণ শ্যামচাঁদ গাঙ্গুলী এসে ডেকে বললেন-বাবাজি বাড়ি আছ?
ভবানী শশব্যস্তে বললেন-আসুন মামা, আসুন-
—আসবো না। আর, আলো আমার আছে। চলো একবার চন্দর-দাদার চণ্ডীমণ্ডপে। ভানী গয়লানীর সেই বিধবা মেয়েটার বিচার হবে। শক্ত বিচার আজগে।
—আমি আর সেখানে যাবো না মামা-
—সে কি কথা? যেতেই হবে। তোমার জন্যি সবাই বসে। সমাজের বিচার, তুমি হোলে সমাজের একজন মাথা। তোমরা আজকাল কর্তব্য ভুলে যাচ্চ বাবাজি, কিছু মনে করো না।
নিলু খোকাকে নিয়ে এর আগেই রান্নাঘরে চলে গিয়েছিল। শ্যামচাঁদ গাঙ্গুলীকে প্রত্যাখ্যান করা চলবে না, দুর্বাসা প্রকৃতির লোক। এখনই কি বলতে কি বলে বসবেন।
রান্নাঘরে ঢুকে তিলু-নিলুকে কথাটা বলতে গেলেন ভবানী, জটিল গ্রাম্য হাঙ্গামা, ফিরতে রাত হবে। খোকা এসে মহাখুশীর সঙ্গে বাবার হাত ধরে বললে-বাবা এসো, খাই-
—কি খাবো রে?
—এসো বাবা, বসো-মজা হবে।
—না রে, আমি যাই, দরকার আছে। তুমি খাও-
—আমি তাহলে কাঁদবো। তুমি যেও না, যেও না-বোসো এখানে। মজা হবে।
২৭১