কিন্তু শিপ্টন্ সাহেবের কষ্ট হয় নি। কেউ জানতো না সে তখন বহুদূরে স্বদেশের ওয়েস্টমোরল্যাণ্ডের অ্যাল্ডরি গ্রামের ওপরকার পার্বত্যপথ রাইনোজ গ্লাস দিয়ে ওক্ আর এল্ম্ গাছের ছায়ায় ছায়ায় তার দশ বছর বয়সের ছোট ভাইয়ের সঙ্গে চলেছিল খরগোশ শিকার করতে, কখনো বা পার্বত্য হ্রদ এল্টারওয়াটারের বিশাল বুকে নৌকোয় চড়ে বেড়াচ্ছিল, সঙ্গে ছিল তাদের গ্রেট ডেন কুকুরটা কিংবা কখনো মস্ত বড় পাইপ আর কার্প মাছ বঁড়শিতে গেঁথে ডাঙায় তুলতে ব্যস্ত ছিল...আর সব সময়েই ওর কানে ভেসে আসছিল তাদের গ্রামের ছোট্ট গির্জাটার ঘণ্টাধ্বনি, বহুদুর থেকে তুষার-শীতল হাওয়ায় পাতা ঝরা বীচ্, গাছের আন্দোলিত শাখা-প্রশাখার মধ্যে দিয়ে দিয়ে...
তিলু ডুমুরের ডালনার সবটা স্বামীর পাতে দিয়ে বললে-খান আপনি। ভিজে গামছা গায়ে ভবানী খেতে খেতে বললেন উঁহু উঁহু, কর কি?
—খান না, আপনি ভালোবাসেন।
—খোকা খেয়েছে?
—খেয়ে কোথায় বেরিয়েচে খেলতে। ও নিলু, মাছ নিয়ে আয়। খয়রা ভাজা খাবেন আগে, না চিংড়ি মাছ?
—খয়রা কে দিলে?
—দেবে আবার কে? রাজারা সোনা কোথায় পায়? নিমাই জেলে আর ভীম দিয়ে গেল। দু’পয়সার মাছ। আজকাল আবার কড়ি চলচে না। হাটে। বলে, তামার পয়সা দ্যাও।
—কালে কালে কত কি হচ্ছে! আরও কত কি হবে! একটা কথা শুনেচো?
—কি?
এই সময় নিলু খয়রা মাছ ভাজা পাতে দিয়ে দাড়ালো কাছে। ভবানী তাকে বসিয়ে গল্পটা শোনালেন। তাদের দেশে রেল লাইন বসেচে, চুয়োডাঙা পর্যন্ত লাইন পাতা হয়ে গিয়েচে। কলের গাড়ি এই বছর যাবে কিংবা সামনের
২৮৭