আপনার ছবি আঁকলে?
—আঁকলে বইকি। ঠিায় বসে থাকতে হোল এক দণ্ড।
—মাগো!
—এখন বোঝো কার দোষ।
পরক্ষণেই তিলুর দিকে ভালো করে চেয়ে দেখলেন। কি সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে! নিখুত সুন্দরী নয় বটে, কিন্তু অপূর্ব রূপ ওর। যেমন হাসি-হাসি মুখ, তেমনি নিটোল বাহুদুটি। গলায় খাজকাটা দাগগুলি কি চমৎকার- তেমনি গায়ের রঙ। সন্দেবেলা দেখাচ্ছে ওকে যেন দেবীমূর্তি।
বললেন-তোমার একটা ছবি আঁকতো সাহেব, তবে বুঝতে যে রূপাখানা কাকে বলে।
—যান্। আপনি যেন-
পরে হেসে বললে-দাঁড়ান, খাবার আনি-সন্দে-আহ্নিকের জায়গা করে দিই?
—হু।
—ও নিলু, শোন ইদিকি-আসনখানা নিয়ে আয়-
নিলু এসে আসন পেতে দিলে। গঙ্গাজলের কোশাকুশি দিয়ে গেল। তিলু যত্ন করে আঁচল দিয়ে সন্দে-আহ্নিকের জায়গাটা মেজে দিলে।
ভবানী মনে মনে যা ভাবছিলেন, আহ্নিকের সময়েও ভাবছিলেন, তা হচ্চে এই; কালও সাহেব তাঁকে বটতলায় যেতে বলেচে। সাহেবের হুকুম, যেতেই হবে। রাজার মত ওরা। তিলুকে নিয়ে গেলে কেমন হয়? অপূর্ব সুন্দরী ও। ওর একটা ছবি যদি সায়েব আঁকে, তবে বড় ভালো হয়। কিন্তু নিয়ে যাওয়াই মুশকিল। যদি কেউ টের পেয়ে যায়-তবে গাঁয়ে শোরগোল উঠবে। একঘরে হতে হবে সমাজে তার শ্যালক রাজারাম রায়কে।
তিলু একখানা রেকাবীতে খাবার নিয়ে এল, নারকেলের সন্দেশ, চিাড়েভাজা আর মুগতক্তি। হেসে বললে-কেমন! মুগতক্তি যে বড় হয় না এ সময়ে! এখন কি দেবেন তাই বলুন-