ভালো না মেয়েমান্ষের। যা বয় সয় সেডাই না ভালো।
নিস্তারিণী হাত নেড়ে গান ধরলে—
ভালবাসা কি কথার কথা সই
মন যার মনে গাঁথা
শুকাইলে তরুবর বাঁচে কি জড়িত লতা—
প্রাণ যার প্রাণে গাঁথা—
সবাই মুগ্ধ হয়ে গেল।
কেমন হাতের ভঙ্গি, কেমন গলার সুর! কেমন চমৎকার দেখায় ওকে হাত নেড়ে নেড়ে গান গাইলে! একজন বললে—নীলবরণী গানটাও বড় ভালো গান আপনি।
নিস্তারিণীও খুশী হোলো। সে ভুলে গেল সাত বছর বয়েসে তার বাবা অনেক টাকা পণ পেয়ে শ্রোত্রিয় ঘরে মেয়েকে বিক্রি করেছিলেন—খুব বেশী টাকা, পঁচাত্তর টাকা। খোঁড়া স্বামীর সঙ্গে সে খাপখাইয়ে চলতে পারে নি কোনোদিন, শাশুড়ীর সঙ্গেও নয়। যদিও স্বামী তার ভালোই। শ্বশুর ভজগোবিন্দ বাঁড়ুয্যে আরো ভালো। কখনো ওর মতের বিরুদ্ধে যায় নি। ইদানীং গরীব হয়ে পড়েচে, খেতে পরতে দিতে পারে না, ছেলেমেয়েদের পেটপুরে ভাত জোটে না—তবুও নিস্তারিণী খুশী থাকে। সে জানে গ্রামে তাকে ভালোচোখে অনেকেই দেখে না, না দেখলে বয়েই গেল! কলা! যত সব কলাবতী বিদ্যেধরী সতীসাধ্বীর দল! মারো ঝাঁটা।
ও জলে নেমেচে। বিরাজ ওর সিক্ত সুঠাম দেহটা আদরে জড়িয়ে ধরে বললে—নিস্তারদিদি, সোনার দিদি!...কি সুন্দর গান, কি সুন্দর ভঙ্গি তোমার! আমি যদি পুরুষ হতুম, তবে তোর সঙ্গে দিদি পীরিতে পড়ে যেতুম—মাইরি বলচি কিন্তু—একদিন বনভোজন করবি চল্।
কেন হঠাৎ নিস্তারিণীর মনে অনেকদিন আগেকার ও ছবিটা ভেসে উঠলো? মনের অদ্ভুত চরিত্র। কখন কি ক’রে বলে সেটা কেউ বলতে পারে? সেই যে তার প্রণয়ীর সঙ্গে একদিন নদীর ধারে বসেছিল—সেই ছবিটা। আর একটা