পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দুঃখু করো না তিনকড়ি। আচ্ছা তুমি দুঃখিত হচ্চি, কিছু দাম দিচ্চি, নিচে তেলাটা রেখে যাও-

 —দাম? কত দাম দেবেন?

 —এক টাকা।

 —তাহলি তো পাচসের তেলের দাম দিয়েই দেলেন কত্তা। মুই কি তেল বিক্রি করতি এনেলাম বাবুর কাছে? এটি দযা করবেন না? আছিই না হয় ছোটনোক-

 — না তিনকড়ি। মনে করে না সেজন্যি কিছু! একটা টাকাই তোমারে নিতি হবে। তার কম নিলি আমি পারব না। ওরে, কে আছিস। সীন্নোথ- বাবা ইদিকি তিনকড়ির কাছ থেকে তেলের ভাঁডট নাও-

 এই সময়ে ছোটসাহেব বাস্ত সমস্ত প্রয়ে সেখানে এসে হাজির হোলো। রাজারামকে দেখে কি বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু তিনি তিনকড়িকে দেখে থেমে গেল।

 রাজারাম দাড়িয়ে উঠে বললেন-পাঁচ মাসের শুওরের বাচ্চা একটা যোগাড় করা গেল হুজুর

 — Oh, the sucking pig is the best পাঁচ মাসের বাচ্চা বড় হলো। মাই খায় এমন বাচ্চা দিতে পারবা না তুমি?

 —না তেমন নেই সায়েব। এত ছোট বাচ্চা কনে পাবো?  —জেলা থেকে হাকিম আসচে, এখানে খাবে। বাচ্চা হলি খাবার জুৎ হোত।

 —এবার হলি রেখে দেবো। সায়েব, সেলাম। মুই চল্লাম। পেরনাম হাই দেওয়ানজি।

 রাজারাম সাহেবকে দেখেই বুঝেছিলেন একটা গুরুতর ব্যাপারের খবর নিয়ে সে এখানে এসেচে। তিনকড়ি বিদায় নেবার পরীক্ষণেই তিনি সাহেবকে জিগ্যেস করলেন -কি হয়েচে সায়েব?

 —খুব গোলমাল। রসুলপুর আর রাহাতুনপুরির মুসলমান চাষীরা ক্ষেপে উঠেছে নীল বুনবে না।

 — কে বললে?

৪০