পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

মতো।

 ময়না এসে বললে-“দাদা, তামাক সাজি।

 —আন।

 —তুমি নাকি আমায় বকছিলে ঘুমুইচি বলে, মা বলচে।

 —বকচিই তো। ধাড়ী মোষ, সংসারে কাজ নেই—এত সকালে ঘুম কেন?

 —বেশ করবো।

 —যত বড় মূখ নয়, তত বড় কথা—আ মোলো যা—

 —গাল দিও না দাদা বলে দিচ্ছি। তোমার খাই না পরি?

 —তবে কার খাস পরিস, ও পোড়ারমুখী?

 —মার।

 —মা তোমাকে এনে দেয় রোজগার করে। বাঁদরি কোথাকার, ধুচুনি মাথায় দোজবরে বুড়ো বর যদি তোর না আনি—

 —ইস বুটি দিয়ে নাক কেটে দেবো না বুড়ো বরের? হাঁ দাদা, তুমি আমাদের বৌদিদিকে কবে আনছো?

 —তোমায় আগে পার করি। তবে সে কথা। তোমার মত খাণ্ডার ননদকে বাড়ি থেকে না তাড়িয়ে~~

 —আহা! কথার কি ছিরি! খাণ্ডার ননদ দেখে তখন বৌদিদির কত কাজ করে দেবে। আমার পালকি কই?

 —পালকি পাই নি। পোড়ানো থাকে না তো। সুরো পোটোকে ব'লে রেখেছি। রথের সময় রং করে দেবে।

 —পুতুলের বিয়ে দেব আষাঢ় মাসে। তার আগে কিনে দিতে হবে পালকি। যদি দাও তবে-

 —যা যা, তামাক সেজে আন। বাজে বকুনি রেখে দে।

 ময়না তামাক সেজে এনে দিল। অল্প কয়েক টান দিয়েই নালু পাল একটা মাদুর দাওয়ায় টেনে নিয়ে শুয়ে পড়লো।

 গ্রীষ্মকাল। আতা ফুলের সুমিষ্ট গন্ধ বাতাসে। আকাশে সামান্য একটু

৬৩