—নেবে না। বলি নি ভাবছো? মনে কষ্ট পাবে। হাত জোড় করে বললে।
—বলুক গে। আপনি ফেরত দিয়ে আসুন।
—সে আর হয় না, যতই পাপী হোক, নত হয়ে যখন মাপ চায়, নিজের ভুল বুঝতে পারে, তার ওপর রাগ করি কি ক'রে? না হয় এর পরে হার ভেঙে সোনা গালিয়ে কোন সৎকাজে দান করলেই হবে।
তিলু আর কোন প্রতিবাদ করলে না। কিন্তু তার মুখ দেখে মনে হোল, সে মন খুলে সায় দিচ্ছে না এ প্রস্তাবে।
হলা পেকে সেই দিনটি থেকে রোজ আসতে আরম্ভ করলে ভবানী বাড়ুয্যের কাছে। কোনো কথা বলে না, শুধু একবার খোকনকে ডেকে দেখে চলে যায়।
একদিন ভবানী বললেন-শোনো হে, বোসো—
সামান্য বৃষ্টি হয়েছে বিকেলে। ভিজে বাতাসে বকুল ফুলের সুগন্ধ। হলা পেকে এসে বসে নিজের হাতে তামাক সেজে ভবানী বাড়ুয্যেকে দিলে। এখানে সে যখনই এসে বসে, তখন যেন সে অন্যরকম লোক হয়ে যায়। নিজের মুখে নিজের কৃত নানা অপরাধের কথা বলে-কিন্তু গর্বের সুরে নয়, একটি ক্ষীণ অনুতাপের সুর বরং ধরা পড়ে ওর কথার মধ্যে।
—বাবাঠাকুর, যা করে ফেলিচি তার আর কি করবো। সেবার গোসাই বাড়ির দোতলায় ওঠলাম বাঁশ দিয়ে। ছাদে উঠি দেখি স্বামী-স্ত্রী শুয়ে আছে। স্বামী তেমনি জোয়ান, আমারে মারতি এলো বর্শা তুলে। মারলাম লাঠি ছুড়ে, মেয়েটা আগে মলো। স্বামী ঘুরে পড়লো, মুখি থান-থান রক্ত উঠতি লাগলো। দুজনেই সাবাড়।
—বলো কি?
—হ্যাঁ বাবাঠাকুর। যা করে ফেলিচি তা বলতি দোষ কি? তখন যৈবন বয়েস ছেল, তাতে বোঝতাম না। এখন বুঝতি পেরে কষ্ট পাই মনে।
—রণ-পা চড়ো কেমন? কতদুর যাও?
—এখন আর তত চড়িনে। সেবার হলুদপুকুরি ঘোষেদের বাড়ি লুঠ করে