সাহেব শ্রীরাম মুচিকে বললে—কি কঠা আছে?
শ্রীরাম বড়সাহেবের পেয়ারের খানসামা, বড়সাহেবকেও সে ততটা সম্ভ্রম ও ভয়ের চোখে দেখে না, অন্য লোকের কথা বলাই বাহুল্য। সে বললে— কথা সবই ঠিক।
—কি ঠিক?
—গলু আর হংস দল পেকিয়েছে হুজুর। নীলের দাগ মারতি দেবে না।
জেন্ বিল্স্ শিপ্টন্ রেগে উঠে দেওয়ানের দিকে চেয়ে বললেন—ইউ আর নো মিল্কসপ—মুচিপাড়ার জমি সব ডাগ লাগাও—টো ডে—আজই। আমি ঘোড়া করিয়া দেখিটে যাইব। শ্যামচাঁদ ভুলিয়া গেলো? রামু মুচি লিডার হইয়াছে—টাহাকে সোজা করিবে।
এই সময়ে শ্রীরাম মুচি হাতজোড় ক’রে বললে—সায়েব, আমার তিন বিঘে মুসুরি আছে, রবিখন্দ। আমার ওটা দাগ যেন না দেন দেওয়ানজি। রামু সর্দারের বাড়ি আমি যাইনে, তার ভাত খাইনে।
—আচ্ছা, গ্র্যাণ্টেড, মঞ্জুর হইল। ডেওয়ান, ইহার জমি বাদ পড়িল।
রাজারাম বললেন—হুজুরের হুকুম।
—আচ্ছা যাও।—দ্যাট ডেভিল অফ্ এ্যান আমীন শ্যুড গো উইথ ইউ— প্রসন্ন আমীন টোমার সাথে যাইবে। হরিশ আমীন নয়।
—হুজুরের হুকুম।
প্রসন্ন চক্রবর্তী নিজের ঘরে ভাত রাঁধছিল। দেওয়ান রাজারাম ঘরে ঢুকতেই প্রসন্ন তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ালো। তবু ভালো, কিছুক্ষণ আগে তার এই ঘরেই নবু গাজিদের দল এসেছিল। নীলের দাগ কিছু কম করে যাতে এ বছর তাদের গাঁয়ে দেওয়া হয়, সেজন্যে অনুরোধ জানাতে।
শুধু হাতেও তারা আসে নি।
আর একটু বেশিক্ষণ ওরা থাকলে ধরা পড়ে যেতে হোত। ঘুঘু রাজারামের চোখ এড়াত না কিছু।
রাজারাম বললেন—কি? ভাত হচ্ছে?