পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে সে বড় হয়েছে, সে কি খবর রাখে না। গাঁয়ে হােক শহরে হােৰু তাদের স্তরের মানুষের দু-পয়সা রোজগার করাটাই কি কঠিন কাজ ? রোজগার করতে সে শহরে যাক, বাপভাই এককালে সম্পন্ন চাবী ছিল এবং এখন পর্যন্ত খানিকটা তাদের আড়ালে থেকেছে বলে অভাবের আসল চাপিটা সোজাসুজি না বুঝে বৌয়ের কাছে পৌরুষ বজায় রাখতেই যাক, কিন্তু সে ভুলে যাবে কোন হিসাবে যে কাজটা মোটেই সহজ হবে না ? এভাবে সে কি করে যাবে যেন অ্যান্ডভেঞ্চার করতে বেরিয়েছে, ভয়-ডর-চিন্তাভাবনার কারণ নেই, বেরিয়ে পড়াটাই একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার ? বাড়িতে কিছু জানাবে না। এই শর্ত করে নিয়ে মহিম কৈলাসের কাছে আশ্রয় নিলে তার নির্ভয় নিশ্চিন্ত উল্লাসের ভাব দেখে এই প্রশ্ন কৈলাসেরও মনে জেগেছিল। কিন্তু সে কিনা নিজেও চাষীর জগতের মানুষ এবং মহিমকে সে কিনা খুব ভালো করেই চিনত, তাই সে ছেলেটাকে অভিনব একটা ব্যতিক্রম বলে ধরে নিয়ে প্রশ্নটা বাতিল করে দেয়নি। সোজা এবং মোটা খাটি মানেটাই ধরতে পেরেছিল। বাস্তব অভিজ্ঞতার অভাবটা সব ক্ষেত্রে সবার কাছেই এক ব্যাপার। খানিকটা একপেশে বাস্তববোধ জন্মায় বলেই চাষীর ছেলের বেলা নিয়মটা অন্য রকম হয়ে যায় না। চাষীর বাস্তববোধ কি ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে স্বপ্নের চেয়েও খাপছাড়া কুসংস্কার, আত্মহত্যার চেয়েও যুক্তিহীন অন্ধ বিশ্বাস ? মহিম সবই জানে কিন্তু তার যে অভিজ্ঞতা নেই ! বাপভায়ের সাথে চাষের কাজে হাত লাগিয়েছে, শহরে রোজগার করতে নিজে সে তো আসেনি কোনদিন । অন্য অনেকের ভাগ্যে কি ঘটেছে সে জানে, কিন্তু তার বেলাও যে ঠিক ওই রকম ঘটবে তার কি মানে আছে ? এমন তো নয় যে গা থেকে শহরে পয়সা কামাতে এসে একজনের ভাগ্যেও শিকে ছেড়েনি । শহরে এসে অনায়াসে উপার্জনের পথ খুজে পেয়েছে এমন লোক ও তো আছে দু-চারজন। তার বেলাই বা সেটা ঘটবে না কেন ? Y 9 R