পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মমতা ও সহানুভূতির একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সকলের সঙ্গে, মানবতার সেতু তৈরি হচ্ছিল। আপন পরের ব্যবধানে, সবার প্রাণের তিক্ত বেদনার স্থানটিতে ঘা লাগায় সেটা আবার ভেঙে যায়। গজেন বলে, আপনারাই তবে তাড়িয়েছেন। ইংরাজকে ? সাধে কি বলি! সাধে কি বলি ! উত্তেজিত হয়ে উঠতে উঠতে জীবন ঝিমিয়ে যায়। তার কথাই বোঝে না। এরা, এদের যে কি বলবে। দাওয়া আর দাওয়ার বাইরে আরও লোক বেড়েছে। এ পাড়ার লোক আগেই এসে গিয়েছিল, ব্যাপার শুনে কৌতুহলের বশে আশেপাশের গা থেকে আরও অনেকে এসে গিয়েছে । সামান্য ঘটনা । জগৎ ও জীবনের এতটুকু এদিক ওদিক হবে না। এ ঘটনার ফলে। কাল সকাল বেলাই একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে জীবনকে বারতলা পৌছে দিয়ে আসবার। সেইখানে ইতি হবে এ ব্যাপারের। তবু কী আগ্রহ এতগুলি লোকের ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করার, দাড়িয়ে দাড়িয়ে কথাবার্তা শোনার । কিন্তু উৎসুক প্রাণগুলির স্পর্শ পায় না। জীবন, সঞ্জীবনী প্রেরণা জাগে না । গজেনের কথার আঘাতেই সে মুষড়ে গেছে। নিজের নালিশ আর জালায় একেবারেই সে ভুলে গেছে প্রাণ দিয়ে প্রাণের সঙ্গে কারবার, শুকিয়ে ছিড়ে গেছে প্রাণের সঙ্গে যোগাযোগের নডিটা । একথা ঠিক যে মানুষ হিসাবে তার জন্য সকলের এ আগ্রহ নয়। ঘটনাচক্রে অতীতের একটি জীবন্ত-প্রতীক, মানুষের রূপ ধরা একখণ্ড ইতিহাস এসে পড়েছে গায়ে, একেবারে তাদের কুঁড়ে ঘরের দাওয়ায়, মানবিক নিদর্শনের মধ্যে সেই অতীত ইতিহাসটুকু দেখাশোনা জানাবোঝার আগ্রহ সকলের। তবু, নন্দ ভাবে, সেই ইতিহাসের একজন রচনাকারী হিসাবে তাজা হয়ে উঠতে তো বাধা ছিল না জীবনের । এমনি পরিবেশে এসে পড়ে কিছুক্ষণের জন্যও কি আদর্শের জন্য নিজের জীবনের ত্যাগ আর দুঃখ স্বীকারকে ইতিহাস বলে গণ্য করতে পারে না মানুষ ? ইতিহাসও তো মানুষকে হাসায় কঁদোয়, উদ্দীপনা দেয়, পথ দেখায়। 霹 S 6