পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ তোমার চিঠি পেলাম। পা-টা মচকে গিয়ে এখানে আটকে গেছি। এরী: খুব করেছে আমার জন্যে । বাইরে খানিক তফাতে লোক জমেছে। যখন তখন যে কোন অবস্থায় চটপট জড়ো হবার শিক্ষাটা ভালভাবেই পেয়েছে গ্রামের মানুষ। জগদীশ বলে, আপনি এখন কি করবেন ? আমি কাল কলকাতায় যাব। খোকন পরশু দেশে ফিরছে। ফিবছে ? বেঁচে থাক, সত্যিকারের বিদ্বান হয়েছে ছেলেটি তোমার। কাগজে পড়ছিলাম, অল্প বয়সে বিলেতে অতবড় ডিগ্রি পাওয়া কি সোজা কথা - ছেলের প্রশংসায় খুশী হয়ে জগদীশ বলে, আপনি কি বাকি রাতটা এখানে ঘুমোবেন ? না আমাদের সঙ্গে যাবেন ? জীবন ইতস্তত করে বলে, এরা বলছিল ভোর ভোর গোরুর গাড়িতে করে পাঠিয়ে দেবে তার চেয়ে আমার মোটরেই চলুন। গিয়ে একেবারে ঘুম দেবেন, সকালে কথাবার্তা হবে ? তাই যদি বলে জগদীশ তবে তাই সই। গায়ের যারা তার জন্য এত করেছে। তাদের ভালো করে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় নেবার সুযোগ জোটে না বলে জীবনের মনটা সত্যই খচখচ করে। এরা হয়তো ভাববে যে বড়লোক জমিদার এল আর আমনি সে পাততাড়ি গুটিয়ে তাড়াতাড়ি তার মোটরে গিয়ে উঠল । কিন্তু কি করবে, তার উপায় নেই। কাল জমিজায়গার বদলে জগদীশের কাছ থেকে টাকাটা না পেলে সে তলিয়ে যাবে একেবারে । অল্প অল্প হাওয়া ছেড়েছিল। ইতিমধ্যেই কোন এক সময়ে । কনকনে উত্তরে হাওয়া। এই হাওয়া ছেড়ে শীতটা এত জেকে না পড়লে জগদীশ হয়তো রাগের মাথায় নিতাই-এর গালে চড়টা বসিয়ে দিত না । সন্ধ্যারাত্রের সেই ঘন গাঢ় কুয়াশা আশ্চর্যজনকভাবে কোথায় উধাও হয়ে গেছে। চারিদিকে মাঝ-আকাশের চাঁদের আলো ছড়ানো। অস্পষ্টতা ঘুচে গিয়ে এখন এদিক, ওদিক নজর চলে । জীবন চারিদিকে তাকায় । RGQ