পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জলে। ধরণীর এই কাছারিতে অল্প প্রত্যাশা নিয়ে এসে বসে থাকতে থাকতে সমস্ত আশা-ভরসার লেশটুকু পর্যন্ত উপে গিয়েছে, ভগবান এবং আল্লাও যেন, এই তাজা রোদের উজ্জল সকালে অস্ত গেছেন চিরতরে । f তবু কাছাকাছি এসে বসেছে যখন সকলে তারা, চিন্তাভাবনা ভুলেই যেন। নিজেদের মধ্যে ধীরে-সুস্থে তারা আলাপ করে নিরুত্তেজ শান্ত কণ্ঠে, ধৈর্যের: যেন তাদের সীমা পরিসীমা নেই। পরস্পরের ঘরোয়া সুখদুঃখের কথা । ফসলের কথা । তার মধ্যে অল্পে অল্পে আলাপের বিষয়টা আবার কেন্দ্রীভূত হতে থাকে, রামপুরের ঘটনায়। সকলেই উৎসুক কৌতুহলী হয়েছিল ও-ব্যাপারে। অভাব অনটন রোগ শোক দুর্ভাবনার কথা যেন ক্রমে ক্রমে চাপাই পড়ে যায় রামপুরের ঘটনার আলোচনায়। ওই নিয়েই বলাবলি করে সকলে। প্রতাপ দীঘিকে দীঘি বলা হলেও আসলে সেটা প্রকাণ্ড একটা বিল, এক ক্রোশ চওড়া দেড়, ক্রোশ লম্বা হবে। কবেকার দীঘি, কোন রাজা বা নবাব বানিয়েছিল অথবা, প্রকৃতি নিজেই সৃষ্টি করেছে। কেউ জানে না। বিলের চারি দিকে ঘুরলে বোঝাও, যায় না মানুষ কোন দিন বাধা দিয়েছিল কি না অথবা এমনিই কিছু বাধের মত, উঁচু হয়ে আছে বিলের চারি দিকের মাটি । বর্ষায় থৈ থৈ করছিল বিলটা বিনা নোটিশে যখন সৰ্বনাশা লোনা জলের বন্যা এল। প্রায় সমতল হল দিক-দিগন্তে ছড়ানো অথৈ বন্যা। আর বিলের জল, কিছু লোনা হল বিলের জল, তবে খুব বেশী নয়। পরের বর্ষায় প্রায় কেটে গেল বিলের জলের অল্প লোনা স্বাদটুকু ! ডোবা পুকুর দীঘি ভাসিয়ে সাফ করে নিয়ে গেছে বন্যা। মাছ গিজ-গিজ করছে প্রতাপ বিলে । জগদীশের ম্যানেজারের হাতে টাটকা কড়াকড়ে নগদ টাকার অনেকগুলি নোটি গুনে দিয়ে বিলটা জমা নিয়েছে। মদন দাস । সে আবার বিলটা বিলি করে দিয়েছে জেলেদের কাছে মোটা সেলামী আর চড়া বন্দোবস্তে, নগদ পেয়েছে খুব কম, কারণ জেলেদের তখন আধ্য পয়সা নগদ দেবার সাধয়