পাতা:ইতিহাস - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

ইতিহাস

পারে। নিখিলবাবুর এই সদ্‌দৃষ্টান্ত, তাঁহার এই গবেষণা ও অধ্যবসায়ের জন্য, বঙ্গসাহিত্য তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞ।

 এই বৃহৎ গ্রন্থে কেবল একটি নিন্দার বিষয় উল্লেখ করিবার আছে। নিখিলবাবু যেখানে সরলভাবে ঐতিহাসিক তথ্য বর্ণনা করিয়াছেন তাহার রচনা অব্যাহতভাবে পরিস্ফুট হইয়াছে। কিন্তু যেখানে তিনি অলংকারপ্রয়োগের প্রয়াস পাইয়াছেন সেখানে তাহার লেখার লাবণ্য বৃদ্ধি হয় নাই, পরন্তু তাহা ভারগ্রস্ত হইয়াছে।


ভারতবর্ষের ইতিহাস। শ্রীহেমলতা দেবী।


বিধাতা স্ত্রীজাতিকে এত কোমল করিয়াছেন যে সেই কোমলতার অবশ্যসহচর দুর্বলতার দ্বারা তাহারা অসহায় এবং পরাধীন। তথাপি তাহা যুগ যুগান্তর চলিয়া আসিতেছে, তাহার কারণ ছেলেদের মানুষ করিবার জন্য এই কোমলতা অত্যাবশ্যক। মাকে কোমলকান্ত করিয়া বিধাতা বলিয়াছেন, বাল্যাবস্থায় মাধুর্যের আনন্দচ্ছটা এবং স্নেহের সুধাভিষেকে মানুষ পালনীয়। পীড়ন, শাসন, সংকীর্ণ নিয়মের লৌহশৃঙ্খল তখনকার উপযোগী নয়। খাওয়ানো পরানো সম্বন্ধীয় ‘মানুষ করা’ চিরকালই এইভাবেই চলিয়া আসিতেছে। কিন্তু ইতিমধ্যে মানুষের মনুষ্যত্ব বিপুলবিস্তার লাভ করিয়াছে। মানসিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এখন মানুষ করা ব্যাপারটা জটিল হইয়া উঠিয়াছে। এখন কেবল অন্নপান নহে, বিদ্যা -দানেরও প্রয়োজন হইয়াছে। কিন্তু বিধাতার নিয়ম সমান আছে। বাল্যাবস্থায় বিদ্যাশিক্ষার সঙ্গেও আনন্দের স্বাভাবিক স্ফূর্তি এবং স্বাধীনতা অত্যাবশ্যক। কিন্তু অবস্থাগতিকে পুরুষের হাতে বিদ্যাদানের ভার পড়িয়া জগতে বহুল দুঃখ

১৫৪