দক্ষিণের রক্ষ এবং উত্তরের যক্ষের মধ্যে যেমন মিল আছে, কিম্ভুতকিমাকার-বিষয়ে তেমনি দক্ষিণের বানর এবং উত্তরের কিন্নরের সঙ্গে মিল আছে।
‘এখন কথা হইতেছে এই যে, যক্ষদিগের রাজধানীতে— কুবেরপুরীতে— মহাদেবের অধিষ্ঠানের কথা কাব্যপুরাণাদি শাস্ত্রে ভূয়োভূয় উল্লিখিত হইয়াছে। তা ছাড়া কৈলাসশিখর মহাদেবের প্রধান পীঠস্থান।
‘রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধ পাঠে একটি বিষয়ে আমার চক্ষু ফুটিয়াছে; সে বিষয়টি এই যে, জনক রাজা যে কেবল ব্রহ্মজ্ঞানী ছিলেন তাহা নহে, সেই সঙ্গে তিনি ভারতে কৃষিকার্য প্রবর্তনের প্রধান নেতা ছিলেন; আর, তাঁহার গুরু ছিলেন বিশ্বামিত্র। পক্ষান্তরে দেখিতে পাই যে, হিমালয় প্রদেশের কিরাত জাতিরা ব্যাধবৃত্তি অবলম্বন করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিত— তাহারা কৃষিকার্যের ধারই ধারিত না। কিরাত জাতি মোগল এবং তাতারদিগের সহোদর জাতি ইহা বলা বাহুল্য। এটাও দেখিতেছি যে, হিমালয়ের উপত্যকায় মহাদেব অর্জুনকে কিরাত-বেশে দেখা দিয়াছিলেন। মহাদেব কিরাতদিগের দলে মিশিয়া কিরাত হইয়াছিলেন। মহাদেব পশুহস্তাও বটেন, পশুপতিও বটেন। মহাদেব যে অংশে কিরাতদিগের ইষ্ট দেবতা ছিলেন সেই অংশে তিনি পশুহস্তা; আর, যে অংশে তিনি খাস মোগলদিগের ইষ্ট দেবতা ছিলেন সেই অংশে তিনি পশুপতি। পুরাকালের মোগল এবং তাতার জাতিরা জীবিকালাভের একমাত্র উপায় জানিত— পশুপালন, তা বই, কৃষিকার্যের ক অক্ষরও তাহারা জানিত না– ইহা সকলেরই জানা কথা। তবেই হইতেছে যে, মোগল এবং তাতার জাতিরা– সংক্ষেপে যক্ষের– একপ্রকার পশুপতির দল ছিল; সুতরাং পশুপতি-মহাদেব বিশিষ্টরূপে তাহাদেরই দেবতা হওয়া
[ ৪ ]