পাতা:ইন্দিরা - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৭৩).pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
ইন্দিরা।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ।

 এখন হইতে এই ইতিবৃত্ত মধ্যে এক শত বার আমার স্বামীর উল্লেখ করিবার আবশ্যক হইবে। এখন তোমরা পাঁচ জন রসিকা মেয়ে একত্র কমিটিতে বসিয়া পরামর্শ করিয়া বলিয়া দেও, আমি কোন্ শব্দ ব্যবহার করিয়া। তাঁহার উল্লেখ করিব? এক শত বার “স্বামী স্বামী” করিয়া কান জ্বালাইয়া দিব? না জামাই বারিকের দৃষ্টাস্তানুসারে, স্বামীকে ‘উপেন্দ্র” বলিতে আরম্ভ করিব? “না প্রাণ নাথ” “প্রাণ কান্ত” “প্রাণেশ্বর” “প্রাণ পতি,” এবং “প্রাণাধিকের” ছড়া ছড়ি করিব? যিনি আমাদিগের সর্ব্বপ্রিয় সম্বোধনের পাত্র, যাঁহাকে পলকেই ডাকিতে ইচ্ছা করে, তাহাকে যে কি বলিয়া ডাকিব, এমন কথা পোড়া দেশের ভাষায় নাই। আমার এক সখী, (সে একটু সহর ঘেঁসা মেয়ে) স্বামীকে “বাবু” বলিয়া ডাকিত —কিন্তু শুধু বাবু বলিতে তাহার মিষ্ট লাগিল না—সে মনোদুঃখে স্বামীকে শেষে “বাবুরাম” বলিয়া ডাকিতে আরম্ভ করিল। আমারও ইচ্ছা করিতেছে, আমি তাই করি।

 মাংসপাত্র ছুড়িয়া ফেলিয়া দিয়া, মনে২ স্থির করিলাম,