পাতা:ইয়ুরোপে তিন বৎসর.djvu/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইয়ুরোপে তিন বৎসর

জলের হরিদ্বর্ণ ক্রমেই গাঢ়তর দেখাইতে লাগিল, এবং আমরা সাগর মধ্যে আসিয়া উহার নিবিড় নীল জল দেখিতে পাইলাম। এক্ষণে চতুর্দ্দিকে আর কিছুই দেখা যায় না; কেবল গভীর নীলবর্ণ সাগর ও গভীর নীলবর্ণ নভোমণ্ডল। এই দর্শন নূতন ও চমৎকার, বিশেষতঃ তারাময় নিদাঘ-রাত্রিকালে যখন অবিরল তরঙ্গমালা চতুর্দ্দিকে উঠিতে থাকে, যখন নির্মেঘ চন্দ্রালোকে শ্বেতবর্ণ ফেননিচয় ইতস্ততঃ উজ্জ্বলাকারে ক্ষণমাত্র বিরাজ করিয়া নীল জলে মিশাইয়া যায়, যখন উজ্জ্বল-কলেবর সমুদকীট সমুদয় নক্ষত্রমালার ন্যায় শুভ্র ফেণার উপর দর্শন দেয়, তখন যে উহা কি অপরূপ রূপ ধারণ করে, তাহ সমাকরূপে বর্ণন করা সুকঠিন।

 ৭ই মার্চ প্রত্যুষে আমরা জাহাজের উপর হইতে করোমেণ্ডেল উপকূলের বালুকাময় তট দেখিতে পাইলাম। ঐ কুলের নিকট দিয়া চারি পাঁচ ঘণ্টা আসার পর, প্রাতে দশ ঘণ্টার সময় মান্দ্রাজ নগরে উপনীত হইলাম। ভূমিতে অবতীর্ণ হইয়া মান্দ্রাজের দুর্গ, পিপেলস্ পার্ক, ও সুন্দর চিড়িয়াখানা সন্দর্শন করিলাম। মান্দ্রাজবাসিগণ বাঙ্গালিদিগের অপেক্ষ কৃষ্ণবর্ণ। তাহাদিগের মুখাকৃতি ও পরিচ্ছদ কলিকাতার খোট্টাদের সদৃশ। গুহ সমুদয় নীচ, অদ্ভুতগঠন এবং কুচিত্রিত অথবা কুসজ্জিত ও কলিকাতার খোট্টাগণের বাটীর ন্যায় বোধ হয়। প্রায় চারি ঘণ্টার পর, আমরা ষ্টীমারে প্রত্যাগত হইলাম। মান্দ্রাজ কলিকাতা অপেক্ষা উষ্ণ এবং বাসের পক্ষে অসুখজনক। আমরা গঙ্গানদীর মুখে ষে সকল সমুদ্রচর বিহঙ্গম দর্শন করিয়াছিলাম, তদ্রূপ পক্ষী মান্দ্রাজের