পাতা:ইস্তাহার (বিশ্বজ্ঞান প্রকাশনী).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তাই বৈশাখের খরতর রুদ্র রৌদ্র দহনে ভস্মীভূত হয়ে যায়
গণজীবনের মূল মর্মকথা; প্রতিভার যোগ্যতার সাফল্যের উজ্জ্বল মানদণ্ড
বেসামাল দারিদ্র্যের দমকা ঝড়ে কালে কালে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায়।
কত মূল্যবান প্রাণ নিঃশেষিত, কত মহান আত্মা লাঞ্ছিত লুণ্ঠিত হয়,
সাধু আর শয়তানের ঐতিহাসিক উপাধিতে স্বচ্ছ তুলনা আনে
নিশি শেষের চরম ব্যর্থতা হতাশা অথবা বিকৃত মনোবৃত্তির বিকাশ।

দুর্বাসার কঠিন অভিশাপ যেন দারিদ্র্যের প্রত্যক্ষ বিদ্রোহের ভাষা,
ভিক্ষা প্রতারণা আত্মদহন অথবা আত্মহত্যা কখনও পথের সম্বল;
কারণ দিনরাত মাটি কেটে পাথর ভেঙ্গে বোঝা বয়ে, তবু মেলে না
পেট ভরার মতো দু মুঠো ভাত, দুখানা রুটি কিংবা তৃষ্ণার জল।
স্নেহপুত্তলিকা রুগ্ন উলঙ্গ শিশুর ভাগ্যে বার্লি জোটে না,
পরম আদরের সোমত্ত বৌয়ের নেই পরনের এক টুকরো শাড়ী,
বেড়া ভাঙ্গা মাটির ঘরের জীর্ণ চালে নেই ছাউনির পাতা,
দারুণ খরায় মাঠের ফাটল বাড়ে, গোয়ালের বলদ মরে অনাহারে,
বাকি খাজনার দায়ে ঘরবাড়ী ঘটি বাটি মান ইজ্জত প্রাণটুকু পর্যন্ত
প্রতি বছরই মহাজনের হাতের মুঠোর মধ্যে অনায়াসে বাঁধা পড়ে।

জনজীবনের এই সব মামুলি কথা কে কবে শুনতে চায়?
কোন হৃদয়বান বোঝে সর্বহারাদের এই চিরাচরিত দুঃখ?
তথাকথিত ভদ্র সভ্য সমাজের চোখে অনীপ্সিত নোংরা জঞ্জাল
এই উপমহাদেশের উপেক্ষিত জনগণের যে বিরাট অংশ,
তারাই কোটি কোটি দরিদ্র নিম্ন মধ্যবিত্ত অবহেলিত নগণ্য মানুষ;
তবু দেশ সংগঠনে তাদের সস্তা জলবৎ রক্তের বিশেষ প্রয়োজন।

জনতার কণ্ঠে সংস্কারের সংগ্রামের উদার ডাক শোনা যায়,
সিভিল সাইরেণে দীর্ঘ দিনের ভয়াবহ কঠিন যুদ্ধের ঘোষণা,
জনগণের আশু পরম বৈরী দারিদ্র্যকে নিঃশেষিত করে মুছে দাও!

এবার তাই ধনী বন্ধুদের সন্ধির হাত উদারতায় প্রসারিত হোক!
যা কিছু সঞ্চিত রয়েছে তাদের গোপন ভারী ভাণ্ডে সমানভাগে

১৩