পাতা:ইস্তাহার (বিশ্বজ্ঞান প্রকাশনী).pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জবানবন্দী

আমরা অগ্রগামী। অগ্রদূতের সারথি।
উর্বর জীবনের স্বপ্নে কাটে আমাদের দিন।
এটুকু যেন আজন্ম কুড়িয়ে পাওয়া আশীর্বাদ;
ভাঙ্গা বাসরের জোড়াতালি দেওয়া
বেসুরো বাঁশীর বিমুনি আজ আমাদের ইঞ্জিনের স্টীম।
শিল্পের সংজ্ঞা আমরা জানি না, ইস্পাতের যুগে
হায়, খলিফাকে প্রতিবেশী করেছি।
আগুনে মেঘ ওড়ে যদি আকাশে আকাশে,
নেহাত উদাসী বাউলের মতোই একতারার চুম্বকে
চাতক পাখীর ঠোঁটে তাকে গ্রাস করি।
চাঁদের আলো ফুলের হাসির দিন ফুরিয়েছে। পুরোনো রঙে
তুলি আর ভেজে না; ধানের চাষে এবার
বিদ্যুৎ চাই, ট্রাকটার চাই।
স্রোতস্বিনী ক্ষীণতর হয়ে আসে প্রতিদিন। আজ
ওপারের হাটের কৃত্রিম কোলাহল এপারে পৌছেচে,
কাঁপন লেগেছে দুরঙা নদীর বুকে। অবাক কাণ্ড!
আর্শিতে নিজেদের বিসদৃশ চেহারা চেনা যায় না;
রঙ মাখা সঙের মতোই আমরা কিম্ভূতকিমাকার!
দুনিয়ার প্রগতির তরী আমাদের ঘাটের পাশে এলে;
বোকা ছেলের হাতের মোয়ার মতো
আমরা বিমুগ্ধ চোখে তা দেখি, মাটির গন্ধ ভুলে।
তাই আমরা আজ দুর্বল বেকুব বিমূঢ়!
বিকৃত সূর্যের ছায়াই মাটিতে, শ্যামল বনানীতে;
আজ আমরা কোন সার্কাসের পংগু 'ক্লাউন',
সুরার প্রলাপ বা রোমাঞ্চ কাহিনীর ভূমিকা ভুলে
শুনি কোন দুরন্ত আসামীর কয়েদ জীবনের ব্যর্থ জবানবন্দী।

২১