পাতা:ঈশানী (প্রথম সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামকৃষ্ণের হৃদয় মথিত, পিষ্ট করিয়া শব্দ উঠিল, “কি হবে, তাই জিজ্ঞাসা করছি ভাই হরেকৃষ্ণ ! আর কি হবে ? কাল সকালে জানাজানি তবে, কাঞ্চনপুরের রামকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা, হরেকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতুষ্পপুত্রী কুলত্যাগিনী হইয়াছে। আত্মীয়স্বজন, দশগ্রামের লোকের কাছে মুখ দেখান ভার হবে ; কলঙ্কে দেশ পূর্ণ হবে। আরও কি হবে, শুনবে ভাই ? এই কলঙ্কের বোঝা মাথায় করে দেশে বাস করা অসম্ভব হবে । তোমাদের হাত ধরে আমার এই সাত পুরুষের ভিটে ছেড়ে দেশান্তরে, -- যেখানে কেউ আমাদের চেনে না, আমাদের পরিচয় জানে না,-সেইখানে চলে যেতে হবে । তারপর উদরায়ের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি অবলম্বন করতে হবে। আরও শুনবে ভাই!--তার পরে ভগ্নহৃদয়ে তুমি আমি নরকে চলে যাব ;—নরকেই যেতে তবে ভাই ;—এমন কুলতাগিনী মেয়ের যে জন্মদাতা, নরক ছাড়া তার অন্য গতি নেই । তারপর ঐ দুটা হতভাগী বিধবা দ্বারেদ্বারে ভিক্ষা করে জীবনপাত করবে। এমনই করে বংশ লোপ চয়ে যাবে। আর কি হবে ?” হরেকৃষ্ণ আর সহ্য করিতে পারিলেন না ; তীব্র কণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, “না, দাদা, তা হতেই পারে না। আপনাকে বলছি, মা আমার কুলত্যাগিনী হয় নাই ; এ কথা প্ৰাণ থাকতে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারব না। সে হতেই পারে না। লক্ষ্মী ক’লত্যাগ করবে, লক্ষ্মী চলে যাবে, আমাদের কুলে কালী দেবে, এ হতেই পারে না । আপনি ভুল করছেন দাদা ?” ܘܓ