পাতা:ঈশানী (প্রথম সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“ভুল তা হলে ভেঙ্গে দাও ভাই! বল, সে ভট্টাচাৰ্য্যদের পুকুরে ডুবে আত্মহত্যা করেছে ; বল, তার মৃতদেহ পুকুরের জলে ভেসে উঠেছে। বল, সেই কথাই বল।” “আমি তাই ভাবছি দাদা ।” “বেশ, তাই ভাব-তই ভেবেই তোমার ভ্ৰান্ত মনকে প্ৰবোধ দাও । কিন্তু জিজ্ঞাসা করি ভাই, কি দুঃখে লক্ষ্মী, আমার বড় মেহের কন্যা লক্ষ্মী, তোমার আদরিণী লক্ষ্মী, মা-খুড়ীমার নয়নের মণি লক্ষ্মী, কোন দুঃখে আত্মহত্যা করবে ?” “কোন দুঃখে ? কুলীনের মেয়ের জীবনই ত দুঃখের দাদা ! লক্ষ্মী বাপমায়ের স্নেহ পেয়েছে, সংসারে তার খাওয়াপরার অভাব হয় নাই, স্নেহ ভালবাসার অভাব হয় নাই ; কিন্তু এই কি নারীজীবনের সব । এরই জন্য কি ভগবান তাকে সৃষ্টি করেছেন। তার প্রাণ কি আর কিছুই চায় না। দাদা ? আপনি জ্ঞানী, আপনি শাস্ত্ৰদৰ্শী, আপনি পণ্ডিত । মেয়ের জীবনে কি আর সাধ-আহলাদ নেই ? আর কি কোন বাসনা নেই ?” “আছে ভাই, আছে। সেই বাসনা পুৰ্ণ করবার জন্যই সে বাপ-মায়ের দিকে চেয়ে দেখলে না ;—বংশ-গরিমার দিকে চাইল না। প্ৰবৃত্তি তাকে যে দিকে নিয়ে যেতে চাইল, সেইদিকে সে চলে গেল । না ভাই, বৃথা কথা ভেবে মনকে প্ৰবোধ দি ও না । তা হতে পারে না, তা হয় নাই, সে কথা ভেব না। মন দৃঢ় কর, লক্ষ্মীর কথা ভুলে যাও ভাই । মনে করি আমার কেউ নেই। মা দুৰ্গতিনাশিনি, এ কি করলে মা ?” R8