পাতা:উপবাস - যদুনাথ মজুমদার.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপবাস।
১১

যখন দেখে যে, বাহির হইয়া কোন লাভ নাই, উহাদের হজম করার কিছু নই, তখন উহারা চুপ করিয়া যায়। তখন হয় কি, না আমাদের হজম করার যত যন্ত্র আছে, তাহারা বিশ্রাস্তি লাভ করে। তখন গৃহ-পরিষ্কার কার্য্যই আরব্ধ হয়। আ’জ পাক-শাক কিছু হইল না, গৃহিণী রান্নাঘর ধুয়ে ছাপ-ছাপাই করিয়া ফেলিলেন। ভিতরেও তাহাই হয়। আভ্যন্তরিক ধৌতি আরব্ধ হয়। দেহযন্ত্রের তন্ত্রধারিণী প্রকৃতির রীতিই এই। তাই উপবাস শরীরশোধক, বিকৃতযন্ত্র-শাসক, রোগবীজ-নাশক এবং দুষ্ট রসের শোষক ও সংস্কারক।

 এনিমা প্রভৃতির ব্যবহার ব্যতীতও যথেষ্ট পরিমাণে জল পান দ্বারা এই আভ্যন্তরিক ধৌতি কার্য্যের বিশেষ সহায়তা হয়। যখন পেট খালি হইয়া গেল, তখন দেখিবে, জিহ্বা পরিস্কার হইয়া গিয়াছে, মুখে দুৰ্গন্ধ মাত্রে নাই, মুখের ‘মিষ্টি মিষ্টি’ ভাব নাই; শরীর লঘু ও মন সুস্থ হইয়াছে, কার্য্যে প্রবৃত্তি হইয়াছে, ক্ষুধা বেশ লেগেছে। কিন্তু উপবাসান্তে ক্ষুধা লাগিলেও বেশী খাইবে না। বরং “আধ পেটা” ভাল, তবু “ভর পেটা” ভাল নয়। আমাদের একটা মেয়েলী প্রবাদ আছে “উন ভাতে দুনো বল, ভরা ভাতে রসাতল!” কথাটার প্রতিবর্ণ স্বর্ণময় সত্য। উপবাসের উপকারিতা এদেশে চিরসুপ্রসিদ্ধ বলিয়া, শাস্ত্র হইতে সামান্য গ্রাম্য প্রবাদবাক্য পর্য্যন্ত তাহার সাক্ষ্য দিতেছে। উপবাসে অবহেলা বা অপারগতা এবং ঔদরিকতা, আর দরিদ্র্যদোষে অপুষ্টিকর কুপথ্যপুঞ্জে সেই ঔদরিকতার