পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৩১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ছেলেদের মহাভারত
৩১৯

আর নির্লজ্জ কে আছে?”

 তাহার উত্তরে কৃষ্ণ বলিলেন, “তুমি অনেক পাপ করিয়াছ এখন তাহারই ফল ভোগ কর৷”

 তাহাতে দুর্যোধন বলিলেন, “রাজার যে সুখ, তাহা আমি ভালো মতোই ভোগ করিয়াছি৷ এখন আমি সবান্ধবে স্বর্গে চলিলাম, তোমরা শোকে দুঃখে আধমরা হইয়া এই পৃথিবীতে পড়িয়া থাক৷”

 এ কথা বলিবামাত্র স্বৰ্গ হইতে দুর্যোধনের উপর পুষ্পবৃষ্টি আরম্ভ হইলে পাণ্ডবেরা লজ্জিতভাবে শিবিরে ফিরিয়া চলিলেন৷ কিন্তু সে রাত্রিতে তাহদের সকলের শিবিরের ভিতরে থাকা হইল না৷ কৃষ্ণের পরামর্শে, যুধিষ্ঠির, ভীম, অৰ্জুন, নকুল, সহদেব আর সাত্যকি তাহার সহিত শিবির ছাড়িয়া নদীর ধারে আসিয়া নিদ্রার আয়োজন করিলেন৷

 ইহার কিছুকাল পরেই কৃপ, অশ্বত্থামা আর কৃতবৰ্মা, দুর্যোধনের উরুভঙ্গের সংবাদ পাইয়া সেখানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন৷ দুৰ্যোধনের তখনকার অবস্থা দেখিয়া, সেই তিন বীরের বুক ফাটিয়া যাইতে লাগিল! তাঁহারা তাঁহার কাছে বসিয়া অনেক কাঁদিলে, দুর্যোধন তাঁহাদিগকে বলিলেন, “আপনারা আমার জন্য দুঃখ করিবেন না; আমি নিশ্চয়ই স্বৰ্গলাভ করিব৷ আপনারা প্রাণপণে যুদ্ধ করিয়াছেন; কিন্তু আমার ভাগ্যে জয়লাভ ছিল না, কি করিব?

 এই কথা বলিয়া দুর্যোধন চুপ করিলে, অশ্বত্থামা দুঃখে ও রাগে অস্থির হইয়া বলিলেন, “আমাকে অনুমতি দাও, আমি প্রতিজ্ঞা কবিতেছি, আজ যেমন করিয়া হউক, শত্রুদিগকে মারিয়া শেষ করিব৷ ”

 এ কথায় দুর্যোধন তখনই অশ্বত্থামাকে সেনাপতি কবিয়া দিলে তাঁহাকে সেই অবস্থায় রাখিয়াই তিন বীর সিংহনাদ করিতে করিতে সেখান হইতে প্রস্থান করিলেন৷


সৌপ্তিকপর্ব

র্যোধনের এখন নিতান্তই দূরবস্থা৷ নিজে তো মরিতেই চলিয়াছেন; তাঁহার পক্ষের যোদ্ধাদের মধ্যেও তিনজনমাত্র জীবিত৷

 এই তিনটি লোকে কি করিতে পারে? তাহারা দুর্যোধনের দুর্দশা আর পাণ্ডবদের পরাক্রমের কথা চিত্তা করিতে করিতে রথে চড়িয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছেন, কিন্তু শক্রসংহারের কোনো উপায় দেখিতেছেন না৷ তাহারা চুপিচুপি শিবিরের কাছে গেলেন কিন্তু সেখানে পাণ্ডবদের সিংহনাদ শুনিয়া তাঁহাদের ভয় হইল৷ তারপর ঘুরিতে