পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৪৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পমালা
৪৫৩

লিখেছেন। একজন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি ও কথাটা ইংরাজীতে লিখলেন যে?’ জাপানী ভদ্রলোক বললেন, ‘আমাদের ভাষার অক্ষর দিয়ে ট্রাফালগার লেখা যায় না,’ সবচেয়ে কাছাকাছি যা লেখা যায়, তার উচ্চারণ হচ্ছে—‘ত্রা-ফারু-গারু’।

 এক সাহেবের বড় বাংলা শেখবার শখ হল। তিনি পণ্ডিত রেখে খুব উৎসাহের সঙ্গে পড়তে আরম্ভ করলেন। গোড়ায় কয়েকদিন বেশ উৎসাহের সঙ্গে পড়া চলল; কিন্তু যখন যুক্ত অক্ষর পড়া আরম্ভ হল তখনই ত সাহেবের যত গোল বাধল। তিনি যুক্ত অক্ষর দেখে ত চটেই অস্থির, ‘কি! একটা অক্ষরের ঘাড়ে আর একটা অক্ষর। এমন আজগুবি ভাষাও ত দেখি নি। এমন ভাষাও আবার ভদ্রলোেকে পড়ে! মানুষের ঘাড়ে মানুষ, আর অক্ষরের ঘাড়ে অক্ষর, এ কেবল তোমাদের দেশেই সম্ভব।’

 এক চাষার একটু বুদ্ধি কম ছিল। চাষা মাঠে যাবে কাজ করতে, সারাদিন ত সেখানে থাকতে হবে তাই তার স্ত্রী বিকালে জলখাবার জন্য তার কাপড়ে দশখানা চাপাটি বেঁধে দিল। চাষা ভারি পেটুক ছিল। সে মাঠে যেতে না যেতেই ভাবল, ‘উঃ! আমার দেখছি এক্ষুনি বড্ড খিদে পেয়েছে, চাপাটি খাব নাকি! না খাব না, তা হবে বিকালে খাব কি?’

 খানিক বাদে সে ভাবল, ‘উঃ! বড্ড যে খিদে পেয়েছে, একখানা চাপাটি খাই, বাকি বিকালে খাব।’

 এই বলেই সে একখানা চাপাটি খেয়েছে অমনি তার খিদে আরো বেড়ে গিয়েছে তখন সে ভাবল ‘আর একখানা খাই।’ যত খায় ততই তার খিদে যেন বেড়ে যায়। একখানা দুখানা করে সে আটখানা খেয়ে ফেলল, তবুও তার পেট ভরল না শেষে বাকি দুখানাও বার করে খেতে হল, আর তাতে তার পেটও ভরে গেল।

 তখন চাষা ভাবল, আটটা খেলাম, তাতে কিছু হল না, আর এ দুটো খেতে না খেতেই পেট ভরে গেল। আহা! এ দুখানা কেন আগে খেলুম না, তা হলে ত গোড়াতেই পেট ভরত, আর আমার কোঁচড়ে আটখানা চাপাটি থেকে যেত। তাইত, আমি কি বোকা!’

 এক ভদ্রলোকের বাড়িতে ভোজ হচ্ছে, একদল গুলিখোর তাই শুনে সেখানে নিমন্ত্রণ খেতে চলল। যেতে যেতে তাদের একজন বলল, ‘আরে, তোরা যে যাবি, ওদের ফটক শুনেছি বড্ড নিচু— ঢুকবি কি করে?’

 তা শুনে আরেকজন বলল, ‘কেন? এমনি করে ঢুকব!’ বলেই সে হামাগুড়ি দিয়ে চলতে আরম্ভ করল। তা দেখে আর সবকটাও তেমনি করে হামাগুড়ি দিতে লাগল।

 এই ভাবে ত তারা গিয়ে ভোজের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে আর অমনি যমদূতের মত চারটে দরোয়ান এসে তাদের ঘাড়ে চেপে ধরেছে। তখন সেই প্রথম গুলিখোরটা ভারি