পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪২
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

ভরত ফিরিয়া ঘরে কহিলেন তায়,
“কি বিপদ হল মাগো, বল তো আমায়।
কোথা পিতা দাদা আর লক্ষ্মণ আমার?
কেন এ সোনার পুরী হেরি ছারখার?”
রাণী বলে, “পিতা তোর নাই রে বাছনি,”
কাঁদিয়া ভরত তায় পড়েন অমনি।
হায়-হায় করি কন কাতর হইয়া,
“না জানি গেলেন পিতা কি কথা কহিয়া।”
রাণী বলে, “তিনি এই বলেন তখন—
হায় রাম! হায় সীতা! হায় রে লক্ষ্মণ!”
ভরত বলেন, “এ কথা কি কথা ভয়ঙ্কর
কি হল তাঁদের মাতা, বলহ সত্বর।”
রাণী বলে, “মরে নাই, রয়েছে বাঁচিয়া,
দিয়াছি রাজায় বলি বনে পাঠাইয়া।
আপদ হইল দূর বাছারে তোমার,
রাজা হয়ে সুখে থাক, ভয় নাই আর।”
এই কথা দুষ্ট রাণী কয় হাসি মুখে,
ছুরি যেন মারে হায় ভরতের বুকে।
রুষিয়া বলেন তিনি, “কি বলিব হায়,
মা না হলে কাটিতাম এখনি তোমায়।
কভু না হইবে, যাহা আছে তোর মনে,
দাদারে আনিতে আমি এই যাই বনে।”
যাহার লাগিয়া রাণী করে হেন কাজ,
খাইয়া তাহার গালি পায় বড় লাজ।
 
কুঁজী ভাবে, পায় জানি কিবা পুরস্কার,
যত ভাবে, তত কুঁজ উঁচু হয় তার।
মুখ ভরা হাসি আর গাল ভরা পান,
মাকড়ির ভারে যেন ছিঁড়ে দুই কান।
চকচকে চীন শাড়ি, চন্দনের ফোঁটা,
হাতে বালা, নাকে নথ, এই মোটা-মোটা।
দুয়ারে দাঁড়ায়ে ছিল সখীদের সাথে,
দারোয়ান ধরে দিল শত্র‌ুঘ্নের হাতে।
শত্র‍‌ুঘ্ন বলেন, “ভালো পাইলাম দেখা—
আজি কিছু সাজা তোর কপালেতে লেখা।”
চুল ধরি পরে যেই দিলেন আছাড়,