পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪৬
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র


অমনি চেঁচায়ে বেটা হল চিৎপাত।
কিন্তু সে আপদ যে রে কিছুতে না মরে,
পাথরে না পিষা যায়, খড়‍্গে নাহি ধরে।
পুঁতিলেন তাই তারে মিলি দুই ভাই,
চলিলেন তারপর ছাড়ি সেই ঠাঁই।
মুনিদের ঘরে-ঘরে ফিরি তারপর,
সুখেতে কাটিয়া গেল দশটি বৎসর।
পরে আসিলেন তাঁরা পঞ্চবটি বনে,
সেথায় হইল দেখা জটায়ুর সনে।
অতি বড় পাখি সে যে, সম্পাতির ভাই,
রামেরে বলিল, “বাবা থাক এই ঠাঁই।
তোমার পিতার বন্ধু আমি যে রে ধন,
সীতারে দেখিব আমি করিয়া যতন।”
ভারি চমৎকার সেই পঞ্চবটী বন,
নানা রঙে ফুল ফল, দেখে ভরে মন।
দুলিয়া সুন্দর পাখি খেলে ডাল ধরি,
কুলকুল করি বয় নদী গোদাবরী।
সেই পঞ্চবটী বনে, সুন্দর কুটিরে,
সুখেতে থাকেন তাঁরা গোদাবরী তীরে।
হেনেকালে কি হইল শুনহ সকলে—
রাক্ষুসী আইল সেথা সূর্পনখা বলে।
লঙ্কায় রাবণ থাকে, দশ মাথা যার,
এই বুড়ি হতভাগী বোন হয় তার!
হাঁ করে সীতারে বুড়ি কয় গিয়ে ধেয়ে,
“মুহি গিন্নী হব এই বুড়িডারে খেয়ে!”
খাইত সীতারে বুড়ি নিশ্চয় তখন,
ভাগ্যে তাব নাক কান কাটেন লক্ষ্মণ।
ব্যথায় অভাগী তায় মরে মাথা কুটি,
“বাঁপ্পরে! মাঁইরে!” বলি ঐ যায় ছুটি!
গেল বুড়ি খর আর দুষণের ঠাঁই।
সেই দুটা হয় তার মাসতুত ভাই।
লোকজন লয়ে তারা থাকে জনস্থানে,
কাটা নাক নিয়া বুড়ি গেল সেইখানে।
পরে যা হইল সে যে বড় ভয়ংকর
রাক্ষসের ডাকে বন কাঁপে থর‍্থর্।
দেখিতে-দেখিতে তারা, খাঁড়া ঢাল নিয়া,