পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৬৯

ক্ষেপিয়া উঠিল তবে কুম্ভকর্ণ ভারি,
পর্বতের চূড়া নিল তুলে তাড়াতাড়ি।
ঠাঁই করে সুগ্রীবেরে ঠুকিল তা দিয়া,
ঘরে লয়ে গেল তারে অজ্ঞান করিয়া।
জাগিয়া ভাবিল মনে বানরের রাজা,
রাক্ষস বেটারে কিছু দিয়া যাই সাজা।
যেই কথা সেই কাজ করে বুদ্ধিমান,
দাঁতে ছিঁড়ে নাক তার, হাতে ছিঁড়ে কান
পায়ের আঁচড়ে নিল ছিঁড়ে দুই পাশ,
চেঁচাল রাক্ষস তায় ফাটায়ে আকাশ।
বিষম ভয়েতে দিল সুগ্রীবেরে ছাড়ি,
পলায়ে বানর রাজা গেল তাড়াতাড়ি।

বোঁচা হয়ে কুম্ভকর্ণ আইল তখন—
নাক নাই, কান নাই ভূতের মতন।
দেখিয়া বানর সব যায় পলাইয়া,
পিছনের পানে আর না চায় ফিরিয়া।
ধনুক ধরিয়া তায় এলেন লক্ষ্মণ,
হাসি কুম্ভকর্ণ তাঁরে কহিল তখন,
“ছেলেমানুষেরে মারি কিবা কাজ মোর?
মারিতে আসিনু আজ দাদাটাকে তোর।”
গদা লয়ে ধায় বেটা শ্রীরামের পানে,
অমনি পড়িল গদা কেটে তাঁর বাণে।
রাগে সে তখনি তুলে লইল পাথর,
পাথর ভাঙিলে নিল লোহার মুদগর।
ছুটিয়া রামের বাণ আসে শত-শত,
লাফায়ে বানর ঘাড়ে উঠেছে বা কত।
আঁচড়-কামড় মেরে করিছ পাগল,
দাঁতে হাতে পায়ে চুল ছিঁড়িছে কেবল,
কিছুতেই কুম্ভকর্ণ না হয় কাতর,
ফিরায় সকল বাণ ঘুরায়ে মুদগর!
রোষে রাম বায়ুবাণ মারেন ত্বরায়,
মুদগর সহিতে তার হাত কাটে তায়।
ব্যথায় তখন বেটা চেঁচায় বিকট,
আর হাতে তালগাছ নিল চট্‌পট্।
সে হাত কাটেন রাম ইন্দ্র অস্ত্র মেরে,

উপেন্দ্র-৯৭