পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৭০
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

তবু সে খিঁচিয়ে দাঁত আসে ডাক ছেড়ে।
দুই পা কাটিল তবু যায় গড়াইয়া—
হাঁ কার খাইতে যায় রামেরে গিলিয়া।
তখন বাণের ছিপি মুখ তার এঁটে,
ইন্দ্র অস্ত্রে মাথা তার দেন রাম কেটে।
ভয়েতে চেঁচাল তায় রাক্ষসের দল,
আনন্দে দেবতাগণ করে কোলাহল।
কাঁদিয়া রাবণ কয়, “কি হবে উপায়?
ভাই বিভীষণে গালি কেন দিনু হায়!”
এমন করিয়া কত কাঁদিল রাবণ,
বড়-বড় ছয় বীর সাজিল তখন।
চলে সাজি অতিকায়, ত্রিশিরারে নিয়া,
দেবান্তক, নরান্তক চলিল সাজিয়া।
মহাপার্শ্ব, মহোদর চলিল দুজন,
ভারি যুদ্ধ করে তারা মিলিয়া তখন।
বানরের কিল খেয়ে মরে গেল পরে,
শুধু অতিকায় বীর সহজে না মরে।
‘অক্ষয় কবচ’ এক আছে তার গায়,
শেল, শূল, তীর, কিছু নাহি বিঁধে তায়।
লক্ষ্মণ মারেন বাণ বাছিয়া-বাছিয়া,
কবচে ঠেকিয়া সব আইসে ফিরিয়া।
তখন পবন এসে কন তাঁর কানে,
“ব্রহ্মাস্ত্র মারহ, বেটা মরিবে সে বাণে।”
তখন লক্ষ্মণ ছুঁড়ে মারেন সে বাণ,
তাহা দেখি রাক্ষসের উড়িল পরান।
শত অস্ত্র মারি তাহা নারে ফিরাইতে,
মাথা কাটি পড়ে তার দেখিতে-দেখিতে।
রাতে এল ইন্দ্রজিত মেঘে লুকাইয়া,
লুকায়ে মারিল বাণ আড়ালে থাকিয়া।
বাণেতে অজ্ঞান হয়ে পড়িল সকলে
হাসিতে-হাসিতে তায় গেল বেটা চলে।
লঙ্কায় ফিরিয়া বেটা কয় তারপর,
“মারিয়া আসিনু যত মানুষ-বানর।”
বাকি শুধু হনুমান আর বিভীষণ।
সবারে খুঁজিয়া তারা ফেরে আলো নিয়া,