পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৭১

না জানি কোথায় কেবা রয়েছে পড়িয়া।
মরার মতন ঐ পড়ে জাম্বুবান
চাহিতে না পারে, চোখে বিঁধিয়াছে বান।
কহিল অনেক কষ্টে চিনি হনুমানে,
“তুমি বাঁচাইলে আজি বাঁচি হে পরানে।
ডিঙ্গাইয়া হিমালয় যাও বাছাধন,
কৈলাস পর্বত পাবে দেখিতে তখন।
আর এক পরবত পাবে তার কাছে,
চারিটি ঔষধ বাছা সেইখানে আছে।
বিশলাকরণী আর মৃতসঞ্জীবনী,
আর যে সন্ধানী আর সুবর্ণকরণী।
এ চারি ঔষধ নিয়া আইস ত্বরায়,
নহিলে আজ তো আর না দেখি উপায়।”
আকাশে ছুটিল হনু, ঝড় যেন বয়,
চোখের পলকে পার হল হিমালয়।
তখন দেখিল হনু, ঔষধ সকল,
কৈলাসের কাছে ঐ করে ঝলমল।
পরে যে কোথায় তারা লুকাইল হায়,
কাছে গিয়া হনু আর খুঁজিয়া না পায়।
হনুমান বলে, “আমি তায় নাহি ভুলি—
পর্বত মাথায় করে লয়ে যাব তুলি।”
এতেক বলিয়া রোষে বীর হনুমান,
পর্বত ধরিয়া দিল কষে এক টান।
চড়্‌চড়্‌ করি তায় এল তাহা উঠি,
মাথায় লইয়া তবে যায় হনু ছুটি।
লঙ্কায় সে ফিরে যেই এল তাহা নিয়া,
ঔষধের গন্ধে সবে উঠিল বাঁচিয়া।
আনন্দে বানর গায় নেচে আর হেসে,
পর্বত লইয়া হনু রাখে তার দেশে।
সেদিন সন্ধ্যায় মিলে বানরসকলে
লঙ্কায় আগুন লয়ে যায় দলে-দলে!
হনু বাকি রেখেছিল যাহা পোড়াইতে,
সকল করিল ছাই দেখিতে-দেখিতে।
ভয়েতে রাক্ষসগুলি হইল পাগল,
কপাল চাপড়ি তারা চেঁচায় কেবল।
আগুন জ্বলিছে হেথা লঙ্কার ভিতর,