পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮১০
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র


হইত।

এ সকল তো নিতান্তই আজকালকার কথা, প্রাচীনকালের অবস্থা আর এখনকার অবস্থায় ইহা অপেক্ষা আরো ঢের বেশি তফাত ছিল। বাণীগঞ্জ অঞ্চলে এমন সব চিহ্ন পাওয়া গিয়াছে যে, তাহাতে বোধ হয় যেন সেসকল স্থান এক সময়ে বরফে ঢাকা ছিল। অধিক কথায় কাজ কি, এই যে হিমালয় পর্বত—যাহার সমান উঁচু পর্বত পৃথিবীতে নাই বলিয়া আমরা এত অহঙ্কার করি—এই হিমালয় এককালে ছিল না। অন্তত তাহা এত বড় ছিল না। তোমরা শুনিলে আশ্চর্য হইবে যে, হিমালয়ে এমন সব জন্তুর চিহ্ন পাওয়া গিয়াছে যে তাহারা সমুদ্রে থাকে। যদি এ কথা সত্য হয় যে ওখানে এক সময়ে সমুদ্র ছিল, তবে মিগালোসোর ভাবিযা দেখ দেখি, আমাদের মাংসখেকো ইনোসব। বাঘের মতন হিংস্র ছিল, হাতিব তম ৫৬ ছিল, ভারতবর্ষের চেহারাটা তখন ক্যাঙাকব ন লাফাইতে পাবি,মানুষের মতন দু-পায় ছুটিয়া বেড়াই। কিবকম ছিল। ভারতবর্ষের স্থানে স্থানে যে সকল পাহাড় আছে তাহার অনেকগুলিব অবস্থা দেখিয়া পণ্ডিতেরা স্থির করিয়াছেন যে, এক সময়ে ভারতবর্ষ ঐ সকল পাহাড়ের সমান উঁচু ছিল। ঝড় বৃষ্টি ইত্যাদি নানা কারণে পৃথিবীর উপরটা ক্রমেই ক্ষয় হইয়া যাইতেছে। এইরূপ কারণে এক সময়ের সেই উঁচু ভারতবর্ষ ক্রমে ক্ষয় হইয়া আজকাল ঐ পাহাড়গুলি মাত্র অবশিষ্ট রহিয়াছে। কেবল ভারতবর্ষেইনয়, পৃথিবীর সকল স্থানেই এইরূপ। উত্তর মেরুর কাছে প্রাচীনকালের যেসকল চিহ্ন পাওয়া গিয়াছে, তাহাতে দেখা যায় যে, এক সময়ে সে স্থানটি আমাদের দেশের মতন গরম ছিল। যেখানে যাও, সেখানেই এইরূপ দেখিবে। ঠাণ্ডা দেশ হয়ত এককালে গরম ছিল, গরম দেশ এককালে ঠাণ্ডা ছিল। ঐ যে উঁচু পর্বত, সমুদ্রের তলায় তাহার জন্ম হইয়াছিল; আর ঐ যে সমুদ্র দেখিতেছ, এক সময়ে তাহার স্থানে একটা দেশ ছিল। পৃথিবীর জন্মাবধি এ পর্যন্ত তাহাতে কত পরিবর্তন যে হইয়াছে, তাহা আমরা কল্পনাও করিতে পারি না। পাথর পরীক্ষা করিয়া পণ্ডিতেরা ইহার কতকটা বুঝিতে পারিয়াছে বটে, কিন্তু তাহাও অতি সামান্যই বলিতে হইবেকারণ, পাথরে আর কত বিষয়ের চিহ্ন থাকা সম্ভব হয়? তথাপি এই সামান্য যেটুকু জানা গিয়াছে তাহাও কম আশ্চর্যের বিষয় নহে। আজকাল মানুষেরা পৃথিবীতে খুব প্রভুত্ব করিতেছে কিন্তু দু-তিন লক্ষ বৎসর আগে হয়ত মানুষ বলিয়া একটা জানোয়ারই পৃথিবীতে ছিল না। তখন হাতিদের রাজত্ব ছিল। উত্তর সাইবেরিয়ার এক এক স্থানে এত হাতির হাড় পাওয়া যায় যে, আজও তাহা দ্বারা