পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮২৪
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

এখনো সমুদ্রের তলায় অনেক স্থানে 9 এইরূপ জিনিস জন্মিতেছে তাহা যে কালে খড়ি হইবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। এই সময়ের কিঞ্চিৎ পূর্বেই স্তন্যপায়ী জন্তু দেখা দিয়াছিল। প্রথম স্তন্যপায়ী জন্তু বেশি বড় ছিল না—- বড়জোর বিড়ালটার মতন হইবে। এইসকল জন্তু ক্যাঙারু, অপোসম ইত্যাদির জাতীয়। এইরূপ দুটি জন্তুর | নাম ‘আফিথীরিয়ম আর ‘ফাস্কলোেথরিয়ম। রামফোরিংকস আমাদের এই পৃথিবী আগে খুব গরম ছিল;তারপর ক্রমে ঠাণ্ডা হইয়া তাহার বর্তমান অবস্থায় আসিয়াছে। পৃথিবীর ভিতরটা এখনো যে খুব গরম আছে তাহার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে, সেই গরম স্থানটা অনেকখানি মাটির নীচে থাকায়, আমরা সহজে তাহা বুঝিতে পারি না। পৃথিবীর উপরকার। খোলাটা এখন বেশ পুরু হইয়াছে, তাহা ভেদ করিয়া ভিতরকার গরম সহজে বাহিরে। পেঁৗছাইতে পারে না। | পৃথিবীর খোলা যখন এত পুরু ছিল না, তখন তাহার ভিতরকার আগুনের তেজে তাহার বাহির অবধি বেশ গরম থাকিত। তখনকার পৃথিবী এ পৃথিবী অপেক্ষা অনেক গরম ছিল; আর সেই গরমটা পৃথিবীর সর্বত্র সমান ছিল বলিয়া বোধ হ!' তাহার কারণ এই যে, পৃথিবীর খোলা সকল স্থানেই সমান পুরু, সুতরাং তাহার ভিতর দিয়া সকল স্থানেই সমান পরিমাণ উত্তাপ বাহিরে আসিত। সূর্যের তখন পৃথিবীর উপরে এতটা প্রভুত্ব ছিল কি না সন্দেহ। তখন এত গরম ছিল বলিয়া আজকালকার চাইতে সে সময়ে অনেক বেশি জল বাষ্প হইয়া আকাশে উঠিত বলিয়া বোধ হয়। সুতরাং আকাশ তখন খুব মেঘলা ছিল। সেই মেঘের ভিতর দিয়া সূর্যের তেজ অধিক পরিমাণে পৃথিবীতে পৌছিতে পারিত না। সে সময়ে আর এ সময়ে একটা মস্ত প্রভেদ তবে এই দেখা যাইতেছে যে, তখন পৃথিবী নিজের তেজেই গরম ছিল, আর এখন সূর্যের তেজটুকু না হইলেই সে শীতে কষ্ট পায়। এখন যে শীত গ্রীষ্ম ইত্যাদি ঋতুর পরিবর্তন হয় তাহার কারণ ঐ সূর্য। সেকালের প্রথম এবং মধ্য অবস্থায় পৃথিবীর উপরে সূর্যের প্রাধান্য খুবই কম ছিল,সুতরাং আজকালকার ন্যায় এরূপ শীত গ্রীষ্মের পরিবর্তন হইত না। তখন বার মাসই গ্রীষ্মকাল; আকাশ মেঘলা; জমি সাহসেতে। মেরকাছেও তখন এত বরফ ছিলনা। গরম দেশের গাছপালা তখন মেরুতেও জতি। সেকালের কথা বলিতে বলিতে আমরা এখন এমন একটা সময়ে আসিয়াছি যে, তখন পৃথিবীর নিজের তেজ কমিয়া গিয়া কতকটা আজকালকার মতন অবস্থা হইয়াছে। শীত, গ্রী ইত্যাদি ঋতুর পরিবর্তন আরম্ভ হইয়াছে। আজকালকার মতন গাছপালা আর জন্তু কমেঅধিক পরিমাণে দেখা দিতেছে। ইহই সেকালের শেষ অব। এখন হইতে স্তন্যপায়ী