পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৮২৮
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

অনেক জন্তুর হাড় পাওয়া যায়। দক্ষিণ আমেরিকায় শ্লথ জাতীয় কয়েকটি জন্তুর হাড় পাওয়া গিয়াছে। ইহাদের মধ্যে দুটির নাম মিগাথরিয়ম্ আর মাইলোড। মিগাথরিয়ম্ শব্দের অর্থ ভয়ঙ্কর জন্তু। এই জন্তু হাতির সমান বড় হইত। লম্বায় প্রায় আঠার ফুট। ইহার পিছনের পা, লেজ এবং কোমরের হাড় হাতির হাড়ের ম্যাথ চাইতেই বড় আর মজবুত। ঐ লোমওয়ালা সেকালর হাতি। এই হাতি মানুষেব সময় পর্যন্ত বাচিয়াছিল। সকল অঙ্গে যে উহার কত জোর ছিল, তাহা ভাবিলে অবাক হইতে হয়। পণ্ডিতেরা বলেন যে, এই জন্তু গাছের পাতা খাইত। কিন্তু এত বড় জন্তুর গাছে উঠিয়া পাতা সংগ্রহ সম্ভব নহে, কাজেই সে গাছ ভাঙিয়া গাছ মারিত। বাস্তবিক এমন প্রকাণ্ড আর ষণ্ডা একটা জন্তুতে ধরিয়া টানাটানি করিলে, বড় বড় গাছও ভাঙিয়া যাইবার কথা। এই জন্তুর একটা কঙ্কাল জাদুঘরে আছে। মাইলোড মিগাথরিয়ম্ অপেক্ষা অনেক ছোট ছিল। কেহ কেহ বলেন যে মাইলোডন নাকি আজও জীবিত আছে। এমনকি, একদল বৈজ্ঞানিক পণ্ডিত ইহার অনুসন্ধানে পাটাগোনিয়া দেশে গিযাছে। তাহাদেব খুব আশা আছে, সেখানকার বনে অনুসন্ধান করিয়া ইহাদের দুএকটাকে ধরিয়া আনিতে পারিবেন। মাইলোডন্ শব্দের অর্থ তার মত দাঁত। নিউজিল্যান্ড দ্বীপে মোয়া নামক একপ্রকার পক্ষীর হাড় পাওয়া যায়। এই পাখি প্রায় বার-তের ফুট উঁচু হইত। দেখিতে অনেকটা উটপাখির মতন ছিল। পাখা না থাকায় উড়িবার ক্ষমতা ছিল না; লম্বা লম্বা পা ফেলিয়া ছুটিয়া বেড়াইত। এই পাখি খুব অল্পদিন হইল লোপ পাইয়াছে। এমনকি, কোন কোন প্রাচীন ভ্রমণকারী বলেন যে, তাহারা উহা দেখিয়াছেন। কিন্তু আজকাল অনেক খুঁজিয়াও জীবন্ত মোয়া কেহ দেখিতে পায় না। মাদাগাস্কার দ্বীপে ইপিঅর্নিস নামক একপ্রকার পাখির হাড় আর ডিম মাপিয়া দেখা গিয়াছে যে, তাহা চৌদ্দ ইঞ্চি লম্বা। তাহার ভিতরে প্রায় দেড়শত মুরগির ডিমের সমান জিনিস ধরিত। সেকালের জন্তু সম্বন্ধে অনেক কথাই বলা হয় নাই। সে সকল কথা তোমরা বড় হইয়া পড়িবে। আমরা অনেক সময় মনে করি যে, পৃথিবীটা বুঝি খালি আমাদের জন্যই হইয়াছিল। আশাকরি শিবথীরিয়ম এতক্ষণে আমাদের এই ভুলটা গণ্ডার অপেক্ষাও বৃহৎ হিমালয়সী সেকালের জন্য