পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
দারোগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

মুখে শুনিলাম, আমি যাহা অনুমান করিয়াছিলাম, তাহাই ঠিক। ধৃত আসামী বা হতব্যক্তির মধ্যে কেহ সে বাড়ী লয় নাই। আহারাদির পর আমি পুনরায় সেই মুক্তরাম বাবুর স্ট্রীটের সেই আস্তাবলে গিয়া উপস্থিত হইলাম। কেনারাম দাদাও আমার সঙ্গে ছিলেন। আস্তাবলে গিয়া শুনিলাম, আবদুল তখনও ভাড়া খাটিয়া ফিরিয়া আইসে নাই। আমি সেখানে তাহার জন্য অপেক্ষা করিব কি না—এই কথা মনে মনে চিন্তা করিতেছি, এমন সময় দেখি, একখানি গাড়ী আসিয়া আস্তাবলের সম্মুখে থামিল। তখন একজন সহিসের মুখে জানিলাম, সেই গাড়ীর গাড়োয়ানের নামই আবদুল। আমি তখন যেন স্বর্গ হাতে পাইলাম। আবদুল কোচবাস্ক হইতে নামিল, গাড়ীর ঘোড়া খুলিয়া দিল, গাড়ী রাস্তার উপরই রহিল, কিন্তু ঘোড়া দুইটাকে সহিসের হস্তে প্রদান করিল। আমি ততক্ষণ রাস্তায় দাঁড়াইয়া তাহার অপেক্ষায় রহিলাম। এই সকল কার্য্য শেষ করিয়া সে একটু সুস্থ হইলে, আমি তাহার নিকটে গেলাম; এবং ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করিলাম, হাঁ হে, তুমি কাল রাত্রে দুর্য্যোগের পর খিদিরপুরে ভাড়া লইয়া গিয়াছিলে?”

 আবদুল আমার প্রশ্ন শুনিয়া কিছুক্ষণ অবাক্ হইয়া আমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল, তাহার পর উত্তর করিল, “আমি ত কালরাত্রে খিদিরপুরে কোন ভাড়া লইয়া যাই নাই!”

 আমি। অস্বীকার কর কেন? তুমি যে ৫৲ পাঁচ টাকা ভাড়া পাইয়াছ, তাহা ত আর আমি কাড়িয়া লইব না।

আবদুল। হাঁ—হাঁ, মনে পড়িয়াছে;—আমি কাল অধিক রাত্রে খিদিরপুরে একটা ভাড়া লইয়া গিয়াছিলাম বটে।