পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।
৩১

মহা হৈ চৈ পড়িয়া গিয়াছিল। তখন সে আসামীর চেহারা কিরূপ, এই কথা লইয়া অনেক তর্ক বিতর্ক হইতেছে শুনিলাম। সেই সকল তর্ক বিতর্কের কথা শুনিয়া আমার মনে কেমন একটা খট্‌কা লাগিল। দুই চারিকথা প্রশ্ন করিয়া যাহা জানিতে পারিলাম, তাহাতে আক্কেল গুড়ুম হইয়া গেল! যে ব্যক্তি দত্তবাবুদের বাড়ী ভাড়া লইয়াছিল, আর যে গতরাত্র সেই খুনের বাড়ী হইতে একজন স্ত্রীলোককে সঙ্গে লইয়া খিদিরপুরে পলাইয়া যায়, এই পলাতক আসামীও সেই ব্যক্তি! তখন কে যেন আমার কানে কানে বলিয়া দিল—সে পলাতক আসামী বাস্তবিক মাতাল ছিল না, মাতালের ভাণ করিয়া থানার হাজতে আসিবার জন্য ধরা দিয়াছিল, তার পর নিজের কাজ উদ্ধার করিয়া চলিয়া গিয়াছে। সে মাতাল আসামীর সহিত খুনী আসামীর সাক্ষাৎ যে হয় নাই, সে কথা কেহ বলিতে পারিল না। আর যে পাহারওয়ালা সেই মাতালকে থানায় ধরিয়া আনে, তাহাকে প্রশ্ন করিয়া জানিলাম যে, সে ব্যক্তির মুখে কোনরূপ মদের গন্ধ সে পায় নাই, তবে রাস্তায় বড়ই মাতলামী করিতে ছিল বলিয়া তাহাকে ধরিয়া আনা হয়।

 তখন আমার মনে আর কোন সন্দেহই রহিল না, আমি নিশ্চয় করিলাম—সেই পলাতক আসামী নিশ্চয়ই খুনী আসামীর লোক। সেই খুনী আসামীর জন্য মেছুয়াবাজার দত্তবাবুদের বাড়ী ভাড়া লইয়াছিল, সেই খুনী আসামীর স্ত্রীলোককে উদ্ধার করিয়া লইয়া গিয়াছে। সে স্ত্রীলোক যে গত রাত্রে নিরাপদ স্থলে পৌঁছিয়াছে, বোধ হয়, সেই সংবাদ খুনী আসামীকে দিবরা জন্য মাতালের ভাণ করিয়া থানায় পর্য্যন্ত আসিয়াছিল।