পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
দারােগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

পরিত্যাগ করিল না—পলায়ন করিল। এই সময় আমার বুক কি জানি কেন—ভয়ে দুরু দুরু করিয়া কাঁপিয়া উঠিল। আমি, কেনারাম দাদা আরও তিনজন পুলিস-কর্ম্মচারী এই পাঁচজনে দূরে দূরে আসামীর অনুসরণ করিতে লাগিলাম। পাছে আসামী আমাদের চিনিতে পারে, সেই কারণ আমরা ছদ্মবেশ করিয়া আসিয়াছিলাম। আলিপুরের জেলখানা হইতে আসামী ভবানীপুরের দিকে চলিল। আমরাও তাহার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া পশ্চাতে পশ্চাতে চলিতে লাগিলাম। আসামী বড় রাস্তা দিয়া না গিয়া এইবার গলির রাস্তা ধরিল, আমরাও সেই গলির মধ্যে তাহার পিছু পিছু চলিতে লাগিলাম। গলি অনেক স্থলে আঁকিয়া বাঁকিয়া গিয়াছে, সুতরাং মধ্যে মধ্যে আসামী আমাদের চক্ষের অন্তরালও হইতে লাগিল। সেই সময় আমাদের প্রাণটা বড়ই আকুল হইয়া উঠিত। এইরূপে ভবানীপুর ও কালীঘাট ছাড়াইয়া আসামী আরো দক্ষিণদিকে চলিল। আমরাও প্রাণপণে তাহার অনুসরণ করিতে লাগিলাম। রাস্তায় যাইতে যাইতে আসামী একটা বাঁশের লাঠি কুড়াইয়া লইয়াছিল। ক্রমে আমরা একটা বাগানওয়ালা বাড়ীর পশ্চাতে আসিয়া পৌঁছিলাম। মধ্যস্থলে বাড়ী আর চারিদিকে প্রাচীরবেষ্টিত বাগান। আমরা সেই বাড়ীর পশ্চাৎদিক দিয়া যাইতেছি—এমন সময় আমাদের সম্মুখস্থিত আসামী হস্তের লাঠির উপর ভর দিয়া মুহূর্ত্তের মধ্যে সেই প্রাচীরের উপর উঠিল, তার পরেই এক লম্ফে বাড়ীর মধ্যে পড়িল। আসামীর এই কাণ্ড দেখিয়া আমরা প্রথমে একবারে হতবুদ্ধি হইয়া গেলাম। পরমুহূর্ত্তেই আমি আমার চারিজন সঙ্গীর মধ্যে তিনজনকে সেই প্রাচীরের তিনদিকে চৌকী দিতে রাখিয়া,