পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর ১৬০ সংখ্যা।

কেবল সাহেবের দিকে। হঠাৎ একটা কথা আমার মনে হইল, আমি অন্ধকারের মধ্যে লুকাইয়া গিয়া লোকটার পিছন দিক হইতে কায়দায় সহিত একবারে তাহাকে জড়াইয়া ধরিলাম। তখন সম্মুখ দিক হইতেও সাহেব ও পাহারওয়ালা আসিয়া পড়িল। এই সময় লোকটা চীৎকার করিয়া উঠিল, “পুলিশ হামকো পাক্‌ড়া হ্যায়।”

 মুহুর্ত্তের মধ্য এই সকল ঘটনা ঘটিল, বেকায়দায় পড়িয়া লোকটা গ্রেপ্তার হইল। তাহা না হইলে গুলি-ভরা পিস্তল হস্তে সেরূপ একজন বলবান্ লোককে গ্রেপ্তার করা বড় সহজ ব্যাপার নহে। সৌভাগ্যক্রমে আমার সঙ্গে একটা হাতকড়ি ছিল, আমি সেই হাতকড়ি বাহির করিয়া সাহেবকে দিলাম। সাহেব তৎক্ষণাৎ পিস্তল কাড়িয়া লইয়া তাহার হাতে হাতকড়ি পরাইয়া দিলেন। লোকটা কাবুলেওয়ালা না পাঠান? সে কথার তখন মীমাংসা করিবার আমাদের অবকাশ ছিল না। সাহেব এই সময় উপরে যাইতে কহিলেন। আমি সিঁড়ি দিয়া দ্বিতলে উঠিলাম। যে ঘরে আলো জ্বলিতেছিল, সেই ঘরে গিয়া দেখি, এক ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড! মেজের উপর একটা লোক চিৎ হইয়া পড়িয়া আছে—তাহার বুকেই গুলির আঘাত লাগিয়াছে—ক্ষতস্থান হইতে তখনও রক্তস্রোত বহিতেছিল। কিন্তু আমার আসিবার পূর্ব্বেই তাহার প্রাণবায়ু বহির্গত হইয়া গিয়াছে। লোকটা যে অবস্থায় পড়িয়াছিল, সেই অবস্থাতেই রহিল; আমি আর কোনরূপ নাড়াচাড়া না করিয়া ধীরে ধীরে নীচে নামিয়া আসিলাম। আসিয়া সাহেবকে সকল কথা বলিলাম। সাহেব শুনিয়া শিহরিয়া উঠিলেন। তার পর আমায় কহিলেন—“এরূপ একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা আমি