পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উভয় সঙ্কট।

বাহিরে দাঁড়াইয়া ছিল, ঐ কথার দ্বারা তাহাকে অপেক্ষা করিতে নিষেধ করা হইল।

 কেনা। কথাটা বলিয়াছ মন্দ নয় রে ভাই! সে কথা নিশ্চয়ই অন্যের উদ্দেশ্যে বলা হইয়াছিল। তা না হইলে সে কথার ত কোন অর্থই হয় না।

  কেনারাম দাদার মতন একজন লোকেরও মনে যখন আমার উক্ত কথায় এই সন্দেহ উপস্থিত হইয়াছে দেখিলাম, তখন আর আমি নিশ্চিন্ত থাকিতে পারিলাম না। দেখিলাম, সে গৃহটি সুসজ্জিত। সেখানে অন্য আলোরও অভাব ছিল না। আমি একটা হারিকেন্ ল্যাম্প জ্বালিয়া লইয়া কেনারাম দাদাকে আমার সঙ্গে আসিতে বলিলাম। প্রথমে আমরা তন্ন তন্ন করিয়া সেই বাড়ীর অন্যান্য ঘর খুঁজিলাম। কোথাও কিছু দেখিতে পাইলাম না। শেষে নীচে নামিয়া নীচেরও সমস্ত ঘর খোঁজা হইল—কি জানি, যদি এই বাড়ীর মধ্যেই অপর কেহ লুকাইয়া থাকে, তাহাকে উদ্দেশ্য করিয়াও আসামী উপরোক্ত কথা বলিতে পারে। কিন্তু কাহাকেও দেখিতে পাইলাম না। তখন আমি আস্তে আস্তে খিড়্‌কীর দরজাটি খুলিলাম দেখি—সম্মুখেই একটা বিস্তীর্ণ মাঠ। তখন হঠাৎ একটা কথা আমার মনে পড়িয়া গেল। অল্পক্ষণ পূর্ব্বেই বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে, যদি খিড়্‌কী দিক হইতে কেহ মাঠের উপর দিয়া গিয়া থাকে, নিশ্চয়ই তাহার পায়ের দাগ দেখিতে পাওয়া যাইবে। আলো লইয়া দেখি—একজন মানুষের পায়ের দাগ স্পষ্ট স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। তখন কেনারাম দাদাকে সঙ্গে লইয়া সেই মাঠে সেই পায়ের দাগ ধরিয়া চলিলাম। কেনারাম দাদার হস্তে আলো—আর আমার দৃষ্টি সেই পদচিহ্নের দিকে।