পাতা:উৎস - জলধর সেন.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎস তিনি আমার দিকে চেয়ে কি যেন বলতে চেষ্টা করলেন। আমি বললাম, আপনি কথা বলবেন না। বাবার তখনও বোধ হয় জ্ঞান ছিল ; আমার কথাও বোধ হয় শুনতে পেয়েছিলেন। তিনি অতি কাতরভাবে বললেন, ‘একটু ঠাণ্ডা জল ।” আর কোন কথাই তার মুখ দিয়ে বের হ’ল না ; ঐ “একটু ঠাণ্ডা জল’ই তার শেষ কথা । র্তার ঐ অবস্থা দেখে আমি চেচিয়ে উঠলাম। মা বাইরে ছিলেন ; তিনি ঘরের মধ্যে এসেই কেঁদে উঠলেন। সেই কান্না শুনে প্ৰতিবেশীরা ছুটে এলেন। মাইতি-জ্যেঠা বললেন, আর কেন, শেষ কাজ করা। ঘরের মধ্যে রেখে কাজ নেই, উঠানে নিয়ে চল। তারপর আর কি। সবাই ধরাধরি করে’ বাবাকে বাইরে আনতেই তার প্রাণ বেরিয়ে গেল। সকলে চীৎকার করতে লাগল। আমার কিন্তু তখন কান্না এলো না-আমার কাণে বাবার সেই শেষ কথা বাজতে লাগল-“একটু ঠাণ্ডা জল ৷” সন্ধ্যার পূর্বেই বাবার মৃতদেহ নিয়ে আমরা সেই এক মাইল দূরে বাধের ধারে শ্মশানে উপস্থিত হলাম। আমি যন্ত্র-চালিতের মত যা’ যা’ করতে হয় করলাম। চিতা যখন জলে উঠল, আমি তখন আর সেখানে বসে থাকতে পারলাম না, একটু দূরে গিয়ে বঁধের কিনারায় বসলাম। একদিকে চিতা জ্বলে উঠল, আর একদিকে সুৰ্য্যদেব অস্ত যেতে লাগলেন। আমি তখন সেই লোহিত্যুবরণ অস্তগামী সুৰ্য্যদেবকে সাক্ষী রেখে প্ৰতিজ্ঞা করলাম, যদি আমি বেঁচে থাকি, তা’ হ’লে গ্রামের এই জলকষ্ট দূর করব।-ঠাণ্ডা জল দিয়ে আমার পিতৃদেবের ଈ8