পাতা:উৎস - জলধর সেন.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎস তৰ্পণ একদিন করব। মা গো, সেই প্ৰতিজ্ঞা-পালনের জন্যই আমি দেশ ছেড়ে, মা-দিদিকে ছেড়ে, চাকরী করতে এখানে এসেছি। আমার এমন শক্তি হবে না, এত উপাৰ্জনক্ষম আমি কোনদিনই হতে পারব না যে, হাজার-দেড়হাজার টাকা খরচ করে” গ্রামে একটা ভাল জলের পুকুর কাটাতে পারি। সেই দিনই রাত্রে ঠিক করলাম যে, আমি আমার বাড়ীতে একটা টিউব-ওয়েল বসাব। মেদিনীপুরে দেখেছিলাম, চার শ” টাকাতেই টিউবওয়েল হয়। আমাদের গ্রামে, আমার বাড়ীতে একটা টিউব-ওয়েল করতে আর না হয় একশ’ টাকাই বেশী লাগবে। এই পাঁচ শ” টাকা যে করে” হোক আমাকে সংগ্ৰহ করতে হবে-নিজের দেহপাত করে।” এই পাচ শ” টাকা আমাকে জমাতে হবে। সেই টাকা দিয়ে বাড়ীতে একটা টিউব-ওয়েল করে, তারই জলে প্ৰথম আমার পিতৃদেবের তর্পণ করবো-ৰ্তার ঠাণ্ডা জলের তৃষ্ণ নিবারণ করব। তারপর আমি যে চাষার ছেলে তাই হব-চাষ করে জীবন কাটাব। মা, আমার সেই প্ৰতিজ্ঞা-পুরণের সময় হয়েছে-পাচ শ” টাকা আমি উপাৰ্জন করেছি। এইবার আমার ছুটী। আমি বাড়ী গিয়ে টিউব-ওয়েল বসাই—আমার ব্ৰত শেষ হোক। আমি ঘরে ফিরে আমার কথা শেষ করতে না দিয়েই মা আমাকে তার বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে হা হা করে” কেঁদে উঠলেন। বাবু উঠে এসে আমার পাশে বসে’ অশ্রুপূর্ণ চোখে বললেন, ধন্য রমেশ, ধন্য তোমার প্ৰতিজ্ঞা । ধন্য তোমার সাধনা ৷ আমি তার পদধূলি গ্ৰহণ করে” মায়ের সেই সৰ্বমঙ্গলময়ী বুকে মাথা দিয়ে কি যে শান্তিলাভ করলাম, সে কথা কেমন করে” বোঝাব। ଈ0;