মহাশয়! আপনি বলিয়াছেন যে, “প্রায়শ্চিত্ত না কর, অন্ততঃ বাহিরে হিন্দুয়ানিটা রাখিও”, অর্থাৎ ভণ্ডামিটা করিও।—মহাশয়! আমার যদি আপনার সহিত আলাপ না থাকিত, আপনার কথা কখন না শুনিতাম, আপনাকে চক্ষে না দেখিতাম, কেবল কাহার প্রতি আপনার প্রদত্ত ঐ উপদেশটি কোন সূত্রে আমার দৃষ্টিপথে আসিয়া পড়িত, ত আমি জ্যোতিষিক নিশ্চয়তার সহিত বলিয়া দিতে পারিতাম, যে আপনি বাঙ্গালী ও আপনার কন্যা আছে।
—আমি বেশ জানি যে আপনি আমাকে সমাজতঃ পরিত্যাগ করিয়াছেন। কিন্তু আপনার ইচ্ছা যে, আমি একবারে মোসলমান না হই; যাহাতে আপনি অন্ততঃ আমার বাটীতে পানটা নির্ভয়ে খাইতে পারেন, ও হুঁকোটা নির্ভয়ে টানিতে পারেন; অথচ আপনার বাটিতে আমি গেলে, আপনি আমাকে কল্কেটা পর্য্যন্ত দিবেন না। যাহা হৌক্ আপনি আপনার পুণ্যময় সমাজে বেশ আছেন, থাকুন। আমিও বেশ আছি। আমি দুনৌকায় পা দিয়া চলিতে ব্যগ্র নহি ও সে দরকারও আমার নাই। “সুখে থাক্তে কেন ভূতে কিলোয়?”
তবে একটা কথা বলি; যে আপনাদের সমাজে কয়টা টিকী আছে যাহা ধনীর পদতলে না গড়ায়?—শুনিতে পাই কালীসিংহ মহোদয় টাকা দিয়া ব্রাহ্মণদিগের টিকী খরিদ করিয়া, এক টিকীর প্রদর্শনী খুলিয়াছিলেন। আমি বিলাতে ঐরূপ নানাপ্রকার মেষের পশম প্রদশর্নী দেখিয়াছি বটে। তাহাতে নানাজাতীয় মেষের পশম প্রদর্শিত হইয়াছিল। কিন্তু বিলাতে এরূপ টিকীপ্রদর্শনী দেখিয়াছি কি না, ঠিক স্মরণ হয় না। কালীসিংহ মহোদয় বোধ হয় ভারতবর্ষে প্রথমে ঐরূপ প্রদর্শনী খোলেন। তাহাতে ভাটপাড়ার, নবদ্বীপের, কালীঘাটের, নানাজাতীয় পণ্ডিতের শাদা, কাল, মসৃণ, ছোট, বড়, খোলা, গেরো দেওয়া, ইত্যাদি