প্রতি ভ্রাতার যে ক্রোধ, অন্যায়ব্যবহারী পিতার প্রতি পুত্রের যে ক্রোধ, সেই ক্রোধে বলিয়াছি।
মহাশয়! আমি সামান্য; কিন্তু আমার সমাজ সামান্য নহে, মূর্খের নহে। এ সমাজে আসিতে চাহেন আসুন, সমাজে এ দ্বার চিরোন্মুক্ত, স্নেহের বাহু প্রসারিত। এখানে লুকোচুরী নাই, শঠতা নাই, নির্ম্মমতা নাই, প্রায়শ্চিত্ত নাই। আসুন, আপনাদিগকে ভাই বলিয়া, আর্য্য বলিয়া, হিন্দু বলিয়া এ সমাজে আলিঙ্গন করিয়া লইব। কিন্তু অতি উন্মাদস্বপ্নেও ভাবিবেন না যে, আমরা মাথা হেঁট করিয়া, বিবেককে কলুষিত করিয়া, পুণ্যের প্রায়শ্চিত্ত করিয়া, আলিঙ্গিত প্রথা ও নবজীবন বিসর্জ্জন দিয়া, আপনাদের সমাজে ঢুকিতে যাইব।
এক কথা বলিয়া দিই। বিলাতফেরতার মূর্খ হইলেও তাহাদের একঘরে করিয়া আপনাদের সমাজ বলবান হইবে না। কোন জাতি কোন কালে নিজের মধ্যে বিচ্ছেদের নীতি অবলম্বন করিয়া বড় হয় নাই। বরং সম্মিলনের নীতিতেই বড় হইয়াছিল। গ্রীস এই গৃহবিবাদে ডুবিল, ভারত এই গৃহবিবাদে উচ্ছন্ন হইল; রোম যে বড় হইয়াছিল তাহা দেশীয়কে জাতিচ্যুত করিয়া নহে, বিজাতিকে স্বজাতি করিয়া লইয়া। বৃটেন ও বড় হইয়াছে বিচ্ছিন্নতায় নহে, মিলনে। জাতিতে কেন, পৃথিবীর চারিদিকেই সংযোগই—উন্নতি, বল, সভ্যতা, জীবন; বিচ্ছিন্নতা—অবনতি ব্যাধি, বর্ব্বরতা, মৃত্যু।
এ সমাজে আর গৃহ বিবাদ কেন? আজ যাহারা এই ক্ষীণ সমাজে নূতন নূতন ব্যাধি আনিতেছে—তাহারা হিন্দু নহে, হিন্দুর শয়তান। যাহার এই বিচ্ছিন্ন সমাজে আবার নূতন পার্থক্যের বেড়া রচনা করিতেছে—তাহা্রা ইহার শক্র। যাহারা এই অৰ্দ্ধমৃত জীর্ণ শীর্ণ জাতিতে আবার বিচ্ছেদের কুঠার মারিতেছ—তাহারা ইহার হত্যাকারী জল্লাদ। বঙ্গ! তুমি জান না যে আজ তোমার অন্ধকারে, তোমার এ ভগ্নগৃহে যাহারা বাস