বারো
শ্রীকালিদাস রায় প্রভৃতি
কত ফল মকুলেই ঝ’রে পড়ে, আবার কত ফুল খানিক ফটে উঠেও আর ভালো ক’রে ফোটে না।
সুকান্ত ভট্টাচার্যকে পরলোকে যাত্রা করতে হয়েছে বালকবয়স পার হয়েই—আঠারো উতরে ঊনিশে পা দিয়ে। এই বয়সেই তিনি নিজের জন্যে একটি নূতন পথ কেটে নিয়েছিলেন। কিন্তু দুদিনেই ফুরিয়ে গেল তাঁর সেই পথে পদচারণ করবার মেয়াদ। আঠারো শতাব্দীতে আঠারো বৎসর বয়সে বিলাতের কবি চ্যাটারটন মারা পড়েন। ইংরেজরা এই অকালমৃত্যুর জন্যে আজও দুঃখপ্রকাশ করে। সুকান্তের কথা মনে করলেই আমার চ্যাটারটনের কথা স্মরণ হয়।
উঠতি বয়সে শ্রীমোহিতলাল মজুমদার ও আমি স্বর্গীয় কুমুদনাথ লাহিড়ীর সঙ্গে হামেশাই ওঠা-বসা করতুম। কাব্যকাকলীর মধ্য দিয়ে কেটে যেত দীর্ঘকাল। কুমুদনাথ খুব ভালো কবিতা লিখতেন। তাঁর স্বকীয়তা ছিল যথেষ্ট, কারুর দ্বারাই হন নি তিনি প্রভাবান্বিত। রবীন্দ্রনাথের দেখাদেখি আজকাল মিলহীন কবিতা লেখার রেওয়াজ হয়েছে। কিন্তু কুমদনাথ ছাড়া তাঁর সমসাময়িক কোন কবিই বেমিল কবিতারচনা করতেন ব’লে মনে পড়ে না। এখানেও ছিল তাঁর নূতনত্ব। “বিল্বদল” নামে তাঁর রচিত একখানি কবিতার বইও সমালোচকদের দ্বারা সাদরে গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু অকালে তিনি মারা গেলেন। লোকেও ভুলে গেল তাঁর কথা।
আবার এমন সব কবিরও নাম করতে পারি, উদীয়মান অবস্থায় অল্পবিস্তর যশ অর্জন ক’রেই ছেড়ে দিয়েছেন যাঁরা কাব্যসাধনা। কেন যে ছেড়ে দিয়েছেন, তা ভালো ক’রে বোঝা যায় না। হ'তে
১০৪