“ধ্যানলোক” প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করে তিনি পরলোক গমন করেন।
কুমুদরঞ্জনও পাড়াগেঁয়ে কবি। বহুকাল আগে একবার মাত্র তাঁকে দেখেছিলুম আমাদের “ভারতী” বৈঠকে। ছোটখাটো একহারা মানুষ, সাদাসিধে বেশভূষা ও কথাবার্তা, কোনরকম চাল নেই। গ্রাম্য স্কুলের শিক্ষক, নজরুল ইসলাম কিছুদিন তাঁর কাছে ছাত্রজীবন যাপন করেছিলেন। কুমুদরঞ্জনের বয়স এখন সত্তরের কাছাকাছি, কিন্তু যে নিষ্ঠা ও উৎসাহ নিয়ে তিনি কবিজীবন সুরু, করেছিলেন, আজও তা সম্পূর্ণ অব্যাহত আছে। আগেও রচনা করতেন রাশি রাশি পদ্য এবং এখনো পত্রিকায় পত্রিকায় কবিতা পরিবেশন করেন ভূরি পরিমাণেই। তিনিই হচ্ছেন সত্যকার স্বভাবকবি। সহর থেকে নিরালা পল্লীপ্রকৃতির শ্যামসুন্দর স্নিগ্ধছায়ায় ব’সে আপন মনে গান গেয়ে যায় বনের পাখী, তিনি হচ্ছেন তারই মত।
কালিদাসও গোড়ার দিকে দস্তুরমত কোমর বে’ধে নিযুক্ত হয়েছিলেন কবিতারচনাকার্যে এবং বেশ কিছুকাল ধ’রে পূর্ণোদ্যমে চালিয়ে গিয়েছিলেন কবিতার কারখানা। কিন্তু ইদানীং তিনি যেন উৎসাহ হারিয়ে হাত গুটিয়ে ব’সে থাকতে চান। সম্পাদকের তাগিদে কখনো-কখনো রচনা করেন দুই একটি কবিতা। কুমুদরঞ্জনের মত কবি যতীন্দ্রমোহন বাগচীও সত্তর বৎসর বয়সেও বিনা তাগিদে পরম উৎসাহে কবিতা রচনা করতেন। কিন্তু করুণানিধান ও কালিদাস ষাট পার হবার আগেই কবিতার সঙ্গে ক’রে এসেছেন দুয়োরানীর মত ব্যবহার। করুণানিধান তো লেখনী ত্যাগ ক’রেই ব’সে আছেন। কয়েক বৎসর আগে আমি যখন “ছন্দা” পত্রিকার সম্পাদক, করুণানিধানের কাছ থেকে একটি কবিতা প্রার্থনা করি। তিনি পত্রোত্তরে জানালেন, কবিতা টবিতা তাঁর আর আসে না।
কালিদাস কিন্তু একেবারে কলম ছাড়েননি। মাঝে মাঝে অল্পস্বল্প পদ্য এবং সেই সঙ্গে অপেক্ষাকৃত বেশী মাত্রায় গদ্য রচনা নিয়ে ব্যাপূত হয়ে থাকেন। তিনি নাকি স্কুলপাঠ্য পুস্তক লেখেন, যা আমার চোখে পড়বার কথা নয়। কিন্তু বিভিন্ন পত্রিকায়
১০৭