যদি হেথায় বকুলবনচ্ছায়ে
মিলন ঘটে তরুণ-তরুণীতে,
দুটি আঁখির ’পরে দুইটি আঁখি,
মিলিতে চায় দুরন্ত সঙ্গীতে;—
কে তাহাদের মনের কথা ল’য়ে
বীণার তারে তুলবে প্রতিধ্বনি,
আমি যদি ভবের কূলে ব’সে
পরকালের ভালোমন্দই গণি!”
বোধ হয় স্কুলমাস্টারী করলে মানষের মন বুড়িয়ে যায় তাড়াতাড়ি। কয়েক বৎসর আগে টালিগঞ্জে কালিদাসের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলুম। সদরে বাড়ির নাম লেখা রয়েছে—“সন্ধ্যার কুলায়”। বাড়ির নামেও জীবনসন্ধ্যার ইঙ্গিত! কবির তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে, আসন্ন অন্ধকারে তিনি শ্রান্ত দেহে বিশ্রাম করবার জন্যে নিজের নীড় বেঁধে নিয়েছেন। কবির পক্ষে এ যেন বড় বাড়াবাড়ি।
কালিদাসকে ভালোবাসি, কিন্তু আজকের কালিদাসকে আমার পছন্দ হয় না। ভাবতে ভালো লাগে সেদিনকার কালিদাসের কথা, যেদিন তিনি কবিতা শুরু করেছিলেন এই ব’লে— “নন্দপুরচন্দ্র বিনা বৃন্দাবন অন্ধকার।” স্মরণ আছে, কবিতাটি মন্ত্রশক্তির মত পাঠকদের কি ভাবে আকৃষ্ট ক’রেছিল। কবিতাটি ফিরত লোকের মুখে মুখে, তা’ মুখস্থ ক’রে ফেলেছিল বালকবালিকারা পর্যন্ত।
স্মরণ আছে, কবিতাটির খ্যাতি দেখে কোন কোন সাহিত্যিকের মনে হয়েছিল হিংসার উদ্রেক। অত্যন্ত অধ্যবসায় সহকারে পরাতন সাহিত্য হাতড়ে তাঁরা প্রমাণিত করতে চেয়েছিলেন, এ কবিতাটি হচ্ছে রচনাচৌর্যের দৃষ্টান্ত! আসলে কিন্তু কিছুই প্রমাণিত হয়নি।
কালিদাসের পরে আর একজন সুকবি সাহিত্যক্ষেত্রে দেখা দেন শ্রীসাবিত্রীপ্রসন্ন চট্টোপাধ্যায় এবং ঠিক তাঁর পরেই ধূমকেতুর মত আত্মপ্রকাশ করেন নজরুল ইসলাম।
একদিন নাট্য-নিকেতনে (এখন “শ্রীরঙ্গম্”) ব’সে অভিনয় দেখছি। আমার পাশেই ঠিক পাশাপাশি আসন গ্রহণ করেছেন
১১০