সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও নির্মলচন্দ্রের দেখা পেয়েছি। তিনি প্রকাশ করেছিলেন একখানি দৈনিক পত্রিকা। বৈকালে দেখা দিত ব'লে তার নাম হয়েছিল “বৈকালী”। বোধ করি সে হচ্ছে ঊনত্রিশ–ত্রিশ বৎসর আগেকার কথা। সম্পাদনায় তাঁকে সাহায্য করতেন শ্রীপ্রেমাঙ্কুর আতর্থী ও শ্রীপ্রভাতচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায় (পরে “ভারত” সম্পাদক)। শ্রীপবিত্রকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ও তাঁদের দলে ছিলেন ব'লে মনে হচ্ছে। কিছুদিন আমিও ছিলাম “বৈকালী”র নিয়মিত নিবন্ধলেখক।
মাঝে মাঝে সখ ক'রে “বৈকালী” কার্যালয়ে বেড়াতে যেতুম। কার্যালয় বলতে বুঝায় “বসুমতী” কার্যালয়। “বসুমতী সাহিত্য-মন্দিরে”র দ্বিতলের দালানের একদিকে ব'সে কাজ করতেন “বৈকালী”র কর্মীরা। এখন সে জায়গাটা ঘিরে নিয়ে হয়েছে “বসুমতী”র বিজ্ঞাপন বিভাগের আপিস। “বৈকালী” ছাপা হ’ত “বসুমতী” প্রেসেই।
সেইখানে আলাপ-পরিচয় হয় “বসুমতী”র কর্ণধার স্বর্গীয় সতীশচন্দ্র মখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি সংবাদপত্র চালনা সম্বন্ধে তাঁর নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করলেন। তাঁর সঙ্গে হয়েছিল আরো কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা। এতদিন পরে সব কথা মনে পড়ে না। য়রোপ থেকে “দৈনিক বসুমতী”র জন্যে মস্ত বড় এক নতুন প্রেস এসেছে, একদিন তিনি আমাদের নিয়ে নীচে নেমে তাই দেখিয়ে আনলেন। বেশ সদালাপী মানষ।
নাট্যকলার জন্যেও নির্মলচন্দ্রের মনের মধ্যে ছিল যথেষ্ট প্রেরণা। ১৯২১ খৃষ্টাব্দে শিশিরকুমারের আবির্ভাবের ফলে গিরিশোত্তর যুগের বাংলা রঙ্গালয়ের পুরানো বনিয়াদ নড়বোড়ে হয়ে যায়। তবে সে যাত্রা শিশিরকুমার এখানে স্থায়ী হ'তে পারেননি। সকলকে অভিভূত ক'রে তিনি দৃশ্যমান ও অদৃশ্য হন ধূমকেতুর মত। কিন্তু নাট্যরসিক বাঙালীর মন তখন সচেতন হয়ে উঠেছে। অভিনয়ের নামে বেলেখেলা নিয়ে ভুলে থাকতে তারা আর রাজি হ'ল না। চাইলে সবাই নবযুগের অভিনব অবদান।
সেই চাহিদার দিকে দৃষ্টি রেখে বাহির থেকে যাঁরা বাংলা
৬৩