পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
এপিক্‌টেটসের উপদেশ।

তাহাই কি ঠিক্? কিন্তু তাহা হইলে, যে সকল বিষয় পরস্পর-বিরোধী তাহারা সকলই কেমন করিয়া ঠিক্ হইতে পারে?

 —“যাহা মনে হয়, তাহাই ঠিক, এ কথা আমি বলিতেছি না। ঠিক্ বলিয়া যাহা আমার বিশ্বাস হয়, তাহাই ঠিক্।”

 “তোমার ঠিক্ বলিয়া যাহা মনে হইতেছে, ঠিক্ তাহার উল্টা বিশ্বাস অন্যের মনে হইতে পারে। অতএব, “মনে হওয়া” আর “বাস্তবিক হওয়া” সকলের পক্ষে সমান কথা নহে। দেখ, ওজন কিম্বা মাপের সময় আমরা “মনে হওয়া”র উপর নির্ভর করি না—তাহাতে সন্তুষ্ট হই না। পরন্তু উভয় স্থলেই, আমরা একটা নির্দ্দিষ্ট নিয়মের অনুসরণ করি। তবে কি শুধু তত্ত্বজ্ঞানের সম্বন্ধেই “মনে হওয়া”-ছাড়া আর কোন নিয়ম নাই? আর, একি কখন সম্ভব, যাহা মানুষের সর্ব্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় তাহার কোন প্রমাণ নাই—আবিষ্কারেরও কোন উপায় নাই। অবশ্যই তাহার একটা নির্দ্দিষ্ট নিয়ম আছে—প্রমাণ আছে। সেই নিয়ম কি, বাহির করিতে চেষ্টা কর। তাহা বাহির করিতে পারিলে সকল প্রকার পাগ্‌লামি ঘুচিয়া যাইবে। তাহা হইলে “মনে হওয়া”র ভ্রান্তি-প্রবণ মানদণ্ডে আর আমরা বস্তু-সমূহের পরিমাপ করিব না।

 ৫। আমরা এখন কোন্ বিষয়ের তত্ত্বানুসন্ধান করিতেছি?— সুখের? আচ্ছা, উহাকে তবে সেই নিয়মের হাতে সমর্পণ কর—সেই তৌলদণ্ডে তাহাকে স্থাপন কর।

 —“আচ্ছা, শ্রেয় এমন একটি জিনিস কি না, যাহার উপর নির্ভর করা আমাদের কর্ত্তব্য।”

 —“নিশ্চয়ই শ্রেয়ের উপর নির্ভর করা কর্ত্তব্য।”

 —“আর শ্রেয়কে বিশ্বাস করা উচিত কি না?”

 —“হাঁ, বিশ্বাস করা উচিত।”