পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাভাবিক সংস্কার ও বিবেক বুদ্ধি।

মনকে প্রকৃত পথে রাখিব কি করিয়া? কারণ, আমি যদি ক্ষতিগ্রস্ত হই, দুঃখ দুর্দ্দশা ভোগ করি, তা হলেই আমি বলিব, ঈশ্বর আমাকে অবহেলা করিতেছেন। বাহ্য় বিষয়ের উপরেই যদি শ্রেয়ের প্রকৃতি ও শ্রেয়ের শ্রেয়ত্ব নির্ভর করে, তাহা হইলে ঈশ্বরের প্রতি তো আমাদের মনের ভাব এইরূপই হইবে। অতএব, ঐহিক সুখ-দুঃখের উপর আমাদের শুভাশুভ নির্ভর করে না, আমাদের যাহা আয়ত্তাধীন সেই ইচ্ছার প্রয়োগের উপরেই আমাদের প্রকৃত শুভাশুভ নির্ভর করে।

 আমাদের যতগুলি মনোবৃত্তি আছে, তন্মধ্যে একটি মনোবৃত্তি আপনাকে আপনি আলোচনা করিয়া থাকে;—আপনাকে আপনি ভাল বলে, কিম্বা মন্দ বলে। এইরূপ আত্মদৃষ্টি কি ব্যাকরণের আছে?— না, ব্যাকরণ শুধু শব্দ সম্বন্ধেই বিচার করিতে পারে। আর সঙ্গীত?— সঙ্গীত শুধু স্বর-সম্বন্ধেই বিচার করিতে পারে। ঐ উভয়ের মধ্যে কোনটিই কি আপনাকে আপনি আলোচনা করিতে পারে?—না, কোনটিই তাহা পারে না। তোমার বন্ধুকে যখন পত্র লেখা প্রয়োজন হয়, তখন ব্যাকরণ বলিয়া দেয়, কি করিয়া তাঁহাকে পত্র লিখিতে হইবে। সঙ্গীত সম্বন্ধেও তাহাই। এখন তোমার পত্র লেখা উচিত, কি উচিত নহে; গাওয়া উচিত কি বাজানো উচিত, এ সমস্ত কথা ব্যাকরণ কিম্বা সঙ্গীত বলিয়া দিতে পারিবে না। তবে, কে বলিয়া দিবে? তোমার সেই মনোবৃত্তিই বলিয়া দিবে যে আপনাকে আপনি আলোচনা করে এবং অন্য সকল বিষয়েরও আলোচনা করিয়া থাকে। সেটি বিবেক-বুদ্ধি। বিবেক-বুদ্ধি ছাড়া আর কোনও বৃত্তিই আপনাকে আপনি আলোচনা করিতে পারে না। অর্থাৎ সে নিজে কি পদার্থ, সে নিজে কি করিতে সমর্থ, তাহার মূল্য কি—এই সব বিষয়ে অন্য বৃত্তি আলোচনা করিতে পারে না। এবং এই বৃত্তি যেমন আপনাকে আপনি আলোচনা