পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তত্ত্বজ্ঞানের পথ।

 একদা, কোন একজন রোমবাসী স্বীয় পুত্র-সমভিব্যাহারে প্রবেশ করিয়া, এপিক্‌টেটসের উপদেশ শ্রবণ করিতে লাগিল। এপিক্‌টেটস্ বলিলেন “এইরূপ আমার উপদেশ-পদ্ধতি”; এবং এই কথা বলিয়া চুপ করিয়া রহিলেন। কিন্তু আগন্তুক ব্যক্তি যখন তাঁহাকে আবার উপদেশ দিতে অনুরোধ করিল, তখন তিনি আবার এইরূপ বলিতে আরম্ভ করিলেন:—

 যাহারা অশিক্ষিত ও অপটু, তাহারা যখন কোন বিদ্যা শিক্ষা করিতে প্রথম আরম্ভ করে, তখন তাহাদের নিকট উহা অত্যন্ত ক্লান্তিজনক বলিয়া বোধ হয়। কিন্তু সেই বিদ্যার দ্বারা যে সামগ্রী প্রস্তুত হয়, তাহার প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার্য্যতা তৎক্ষণাৎ সকলেরই প্রত্যক্ষগোচর হইয়া থাকে, এবং সেই সকল সামগ্রীর মধ্যে প্রায়ই এমন কিছু থাকে, যাহা চিত্তাকর্ষক ও প্রীতিজনক। কোন চর্ম্মকার যখন পাদুকা নির্ম্মাণ করে, তখন যদি কেহ সেখানে দাঁড়াইয়া দেখে, তখন তাহা দেখিয়া তাহার সুখ হয় না; কিন্তু বাস্তব পক্ষে পাদুকা একটি কাজের জিনিস; এবং উহা তৈয়ারি হইয়া গেলে, দেখিতেও মন্দ লাগে না। এইরূপ ছুতার-মিস্ত্রীরও কাজ দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া দেখা অত্যন্ত কষ্টকর বলিয়া বোধ হয়; কিন্তু কাজটি শেষ হইলে, তাহার প্রয়োজনীয়তা তৎক্ষণাৎ উপলব্ধি হয়। সঙ্গীত-শিক্ষা সম্বন্ধে এই কথাটি আরও খাটে। সঙ্গীত-শিক্ষার উপদেশ শোনা অত্যন্ত কষ্টকর; কিন্তু সঙ্গীত কাহার না ভাল লাগে?—অশিক্ষিত ব্যক্তিরও ভাল লাগে। যিনি তত্ত্ববিদ্যা শিক্ষা করেন, তাঁহারও একটা বিশেষ উদ্দেশ্য আছে; এমন করিয়া সমস্ত বাহ্য ঘটনার সহিত ইচ্ছাকে খাপ্ খাওয়াইতে হইবে, যাহাতে আমার