পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নব-শিক্ষার্থীর প্রতি।
১৭

করিয়ো না। কারণ, তুমি যদি সেরূপ কোন কাজ কর, তোমার মধ্যে যে মানুষটি আছে, সেই মানুষটি বিনষ্ট হইবে; তোমার মানবজীবনের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইবে না। যখন আমরা কলহ-বিবাদ করি, পরস্পরের হানি করি, ক্রোধে উন্মত্ত হই, উগ্রচণ্ড মুর্ত্তি ধারণ করি, তখন আমরা কতটা নীচে নামিয়া যাই?—তখন আমরা হিংস্র জন্তুদিগেরই সমান হইয়া পড়ি। যখন আমরা লুব্ধ, ইন্দ্রিয়-পরায়ণ, কাণ্ডাকাণ্ডজ্ঞান-শূন্য হইয়া বিভৎস জঘন্য কাজে প্রবৃত্ত হই, তখন আমরা কতটা নামিয়া যাই?—তখন আমরা গোমোষাদির ন্যায় হইয়া পড়ি। ইহাতে আমরা হারাই কি? হারাই আমাদের বিবেক-বুদ্ধি। মনুষ্যের যেটি আসল জিনিস্ তাহা হইতেই ভ্রষ্ট হই।

 ৪। বীণা যদি বীণার কাজ না করে, বংশী যদি বংশীর কাজ না করে, তাহা হইলে তাহাদের থাকা, না থাকা, দুই সমান। মানুষের সম্বন্ধেও তাহাই বলা যাইতে পারে। যাহার যে কাজ সেই কাজ যে যতটা করিয়া উঠিতে পারে, সে ততটা আপনাকে বাঁচাইয়া রাখে; যে যতটা তাহা হইতে বিচ্যুত হয়, সে ততটা আত্মবিনাশ সাধন করে।

 ৫। কোন বিষয়ে দৃঢ়বিশ্বাস সহজে উৎপন্ন হয় না। যদি কোন ব্যক্তি প্রতিদিন কোনও একই বিষয়-সম্বন্ধে কথা কহে, কথা শোনে, সেই সঙ্গে জীবনের কার্য্যেও তাহা প্রয়োগ করে, তবেই সেই বিশ্বাস তাহার মনে বদ্ধমূল হয়।

 ৬। কোনও মহৎ শক্তি লাভ করা প্রথম শিক্ষার্থীদিগের পক্ষে বিপদজনক। “কিন্তু আমাকে তো প্রকৃতির অনুসারে চলিতে হইবে”? রুগ্ন ব্যক্তির পক্ষে ওকথা খাটে না। যাহাতে তুমি পরে সুস্থ লোকের মত থাকিতে পার, এই উদ্দেশে আপাততঃ কিছুকালের জন্য তোমাকে রুগ্ন ব্যক্তির মত চলিতে হইবে। যাহাতে তুমি পরে বিবেক-বুদ্ধির