পাতা:এপিক্‌টেটসের উপদেশ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জীবনের খেলা।
২৩

 ৫। তাই ক্রিসিপস্ এই কথাগুলি বেশ বলিয়াছিলেন—“যতদিন ভবিষ্যৎ আমার কাছে প্রচ্ছন্ন থাকে, ততদিন প্রকৃতির অনুযায়ীবস্তুগুলি প্রাপ্তির পক্ষে যে অবস্থা সর্ব্বাপেক্ষা অনুকূল, তাহাই আমি অবলম্বন করিয়া থাকি; কারণ, ঈশ্বর আমাকে এইরূপ নির্ব্বাচনের অধিকার দিয়াছেন। কিন্তু আমি যদি জানি, ঈশ্বর আমাকে পীড়িত হইবার জন্য আদেশ করিয়াছেন, তাহা হইলে আমি আপনা-হইতে সেই দিকেই অগ্রসর হইব। এমন কি, আমার পাদদ্বয়ের যদি বুদ্ধিবৃত্তি থাকিত, তাহা হইলে সেও আপনা হইতে অগ্রসর হইয়া কর্দ্দমে লিপ্ত হইত।”

 ৬। ধানের শিষ্‌গুলি যে বাহির হয় তাহা কিসের জন্য?—শুষ্ক হইবার জন্যই কি নহে? আর কৃষকেরা উহাকে কাটিবে, শুধু এইজন্যই কি উহা শুষ্ক হয় না? কেন না, নিজের জন্য জীবন ধারণ করিতে উহার পৃথিবীতে আসে নাই। অতএব উহাদের যদি জ্ঞান থাকিত, কৃষকেরা যাহাতে উহাদিগকে না কাটে—এইরূপ প্রার্থনা করা কি উহাদের পক্ষে উচিত হইত? কেন না, ধান-কাটা না হওয়া ধানের পক্ষে বিষম অভিশাপ; সেই প্রকার জানিবে, অকর্ত্তিত পাকা ধানের ন্যায়, মানুষের মরাও মানুষের পক্ষে অভিশাপ। কেন না, আমরাও একপ্রকার কর্ত্তনীয় বস্তু। তবে, আমরা জানি যে আমরা কর্ত্তিত হইব, তাই আমরা এ-সম্বন্ধে এত আক্রোশ প্রকাশ করিয়া থাকি। অশ্বের ভালমন্দ কিসে হয়, অশ্বপালক যেরূপ বুঝে, আমরা সেইরূপ আপনাকে বুঝি না—সমস্ত মানবজাতির ভাল-মন্দ কিসে হয় আমরা তাহা বুঝি না। কিন্তু ক্রিসান্‌টস্ যখন শত্রুকে শস্ত্রাঘাত করিতে প্রবৃত্ত সেই সময়ে সেনাপতি তুরীধ্বনি করিয়া তাহাকে ফিরিতে আদেশ করিলেন—সেই তুরীধ্বনি শুনিয়া ক্রিসান্‌টস্ শত্রুকে আঘাত করিতে ক্ষান্ত হইল;—